সম্প্রীতি নষ্ট করা দুষ্টু লোক থেকে সতর্ক থাকতে হবে

13

নিজস্ব প্রতিবেদক

সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, দুষ্টু লোকরাই সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়। তাদের থেকে সতর্ক থাকতে হবে। পশুর ঘরে জন্ম নিলে পশু হয়। মানুষের ঘরে জন্ম নিলে মানুষ হয়। যার মধ্যে মনুষ্যত্ব নেই, সে অমানুষ হবে। একজন মানুষ আরেকজনকে খুন করলে পশুত্ব চলে আসে। পশু বলেই মানুষ খুন করে। এমন অমানুষ থেকে দূরে থেকে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
বাঁশখালীর গুনাগরির ঋষিধামে গতকাল বিকালে একবিংশতম আন্তর্জাতিক কুম্ভমেলার ধর্মসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিটি মেয়র বলেন, হিন্দু ধর্ম প্রাচীন ধর্ম। আমি দেখেছি হিন্দু বাড়ির উঠোন, মুসলিম বাড়ির রান্নাঘর পাশাপাশি। সবখানেই সুন্দর সম্প্রীতি। দুর্গাপূজাকে কীভাবে সফল করা যায়, সেজন্য সজাগ থাকে।প্রতিমা পাহারা দেয়। সকলের মাঝে সার্বজনীনতা কাজ করে।
তিনি বলেন, কুম্ভমেলা সমস্ত ভক্তদের মিলনমেলা। কুম্ভমেলায় যে ধর্মীয় গাম্ভির্য্য তা শিক্ষণীয়। কারও কোন সাড়াশব্দ নেই। পিনপতন নীরবতা। ধর্ম সকলের ভেতরে কাজ করছে বলেই সবাই শান্ত আছে। মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালনের সময় ধর্ম জাগ্রত হয়েছে সবার মধ্যে। সবার মধ্যে ধর্মীয় চেতনা এসেছে। চেতনা হচ্ছে আবগের বিষয়। চেতনা মানুষের আবেগকে জাগ্রত করে। আমরা চেতনা থেকেই যুদ্ধে গিয়েছি। স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনে সবাই প্রাণ দিয়েছে। একটা সময় সেটি পারি নাই। অস¤প্রদায়িক দেশ গঠনের লক্ষ্যেই মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম।
উদ্বোধকের বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি শশাংক শেখর সরকার বলেন, সবকিছুর শেষ কথা ধর্ম। একজন ধার্মিক ধর্মকে ধারণ করলেই প্রকৃত ধার্মিক হবেন। ধর্মের মধ্যে প্রথম শর্ত জ্ঞানী হতে হবে। ধর্মের ৫টি আঁধার প্রতিপালন করতে না পারলে ধার্মিক হওয়া যাবে না। ধার্মিক, প্রেমিক, নীতিবান, ধৈর্য, নিবেদন থাকতে হবে। এই ৫টির বাইরে গেলে ধর্ম হবে না।
তিনি বলেন, জ্ঞানী হলে অন্য ধর্মকে হিংসা করতে পারবে না। ধর্মের পাশাপাশি জ্ঞানী হতে হবে। সকল অধিকারকে সমানভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। তাইতে মনীষিরা বলেছেন ‘অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে যাও। মৃত্যু থেকে অমৃতে নিয়ে যাও।’ আমরা সবই করছি, অর্থবিত্ত করছি, ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছি। উন্নয়ন করছি। কিন্তু নিজের আত্মার জন্য কি করছি? অসত্য থেকে সত্য যাওয়ার চেষ্টা করছি। ধর্ম করলে সবার মধ্যে স¤প্রীতি ছড়িয়ে দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গফুর।
ঋষিকুম্ভ উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুকুমার চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং বিভাষ গুহ ও সুজন করের সঞ্চালনায় এতে অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পূজা কমিটির সাবেক সভাপতি এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী পরিমল চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক নিতাই প্রসাদ ঘোষ, বিমল কান্তি দে, গৌরাঙ্গ দে, শ্যামল কান্তি দাশ, কালীপুরের চেয়ারম্যান আনম শাহদাত আলম প্রমুখ।