শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি ‘দেশে আনলে’ সকলেরই ক্ষতি : পরিকল্পনামন্ত্রী

14

পূর্বদেশ ডেস্ক

শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতিকে ‘মালা দিয়ে’ দেশে আনা হলে সকলের ক্ষতি হবে জানিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি না করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কখনো শ্রীলঙ্কার মতো হবে না দাবি করে তিনি বলেন, ‘পলিটিক্যাল আনরেস্ট তৈরি কইরেন না। পলিটিক্যাল আনরেস্ট তৈরি হলে আখেরে আপনাদের আমাদের সকলের ক্ষতি হবে’।
গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন অয়োজিত এক গোল টেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা, শ্রীলঙ্কা বলা হচ্ছে; কিচ্ছু হবে না, যদি না শ্রীলঙ্কাকে বয়ে এখানে মালা দিয়ে আনা না হয়। মালা দিয়ে বয়ে যদি কেউ আনতে চায় তাহলে সেটা হবে তাদের নিজেদের স্বার্থে বাংলার মানুষের স্বার্থে হবে না, শ্রমিকের কল্যাণে হবে না, মালিকের স্বার্থেও হবে না’।
স্বাধীনতার পর ইতিহাসের সব থেকে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করতে হচ্ছে শ্রীলঙ্কাকে। দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এর ফলে তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো পণ্য আমদানি করতে পারছে না। তার উপর মাথায় চেপে আছে বিশাল অংকের ঋণের বোঝা। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, ওষুধ ও খাবারসহ সব কিছুর সংকট দেখা দিয়েছে। এর জেরে গত সোমবার বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠা শ্রীলঙ্কার বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বোতে ভয়াবহ সংঘাতে অন্তত নয়জন নিহত এবং তিনশর বেশি মানুষ আহত হন।
বিক্ষোভের মুখে ওই দিন প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান মাহিন্দা রাজাপাকসে। নতুন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন বিরোধী দলের নেতা রনিল বিক্রমাসিংহে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন,‘ এই মুহুর্তে এই অঞ্চলে আমরা সবচেয়ে স্থিতিশীল অবস্থানে আছি। শ্রীলঙ্কা, ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, নেপাল এমনকি মালয়েশিয়ার তুলনায় আমরা স্থিতিশীল পরিবেশে আছি। ন্যায্যতা বা অন্যায্যতা নিয়ে আপনাদের প্রশ্ন থাকতে পারে। আমি সেটা নিয়ে কথা বলছি না। কিন্তু এটাতো সঠিক আমাদের দেশের মোটা দাগে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে’।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার এই চিত্র তুলে ধরে এম এ মান্নান বলেন, ‘আমাদের ঘাটতি কোথায় আছে আমাদের বলুন, আমরা শুনতে রাজি আছি’।
শ্রমিকদের জন্য কেমন বাজেট চাই শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তাদের কল্যাণে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করার দাবি উঠলে এর পরিবর্তে নগদ টাকা দিয়ে দেওয়ার পক্ষে মত দেন পরিকল্পনামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ক্যাশ, ক্যাশ, ক্যাশ, ক্যাশ এর মাধ্যমে সাহায্য করা সবচেয়ে ভাল। ক্যাশ এর মাধ্যমেও চুরি করা যায়, তবে ক্যাশ দিলে চুরি একটু কম হয় বলে আমি মনে করি। আমি মনে করি রেশনিং এর যে ব্যবস্থাপনা সেটা বিশাল একটা ব্যাপার। আমাদের দেশে এই ব্যবস্থাপনা যত বেশি প্রসারিত তত বশি লিকেজ। প্রণোদনা প্যাকেজের ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য। এই যে প্রধানমন্ত্রী বা সরকার এত লক্ষ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করল কিন্তু সেটা মূল ভুক্তভোগীর কাছে পৌঁছাতে পৌঁছাতে চুইয়ে চুইয়ে শেষ পর্যায় গিয়ে পৌঁছেছে’। খবর বিডিনিউজের
এম এ মান্নান বলেন, ‘রেশনিংয়ে আমি মানি একটি কল্যাণ আছে। কিন্তু এটাকে পৌঁছানোর ব্যাপারে আমার সংশয় আছে, তখনো ছিল, এখনো আছে। আমাদের ডিজিটাল সিস্টেম আছে, এর মাধ্যমে দেশের কোনায় কোনায় টাকা পৌঁছে দেওয়া যায়। আমরা রেশনিংয়ের মাধ্যমে যে পরিমাণ পণ্য দেব সেই টাকাটা হিসাব করে মানুষের কাছে পৌঁছে দেব’।