মৌসুমের শুরুতে তাপমাত্রা কমে সারা দেশে শীত জেঁকে বসেছে। কনকনে শীতে কাঁপছে মানুষ, বিপর্যস্ত জনজীবন। শৈত্যপ্রবাহ ও ঘনকুয়াশার কারণে দেশের কয়েক জেলায় দিনভর সূর্য দেখা যায়নি। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডিসেম্বরের শেষ ও জানুয়ারীর শুরুতে বৃষ্টি ও শৈতপ্রবাহ হতে পারে। শীত ধনী ও বিত্তবানদের ভ্রমণের মৌসুম হলেও গরীব, ভাসমান, ছিন্নমূল মানুষের জন্য অবর্ণনীয় কষ্টের। খোলা আকাশের নীচে বসবাসকারী মানুষগুলোর কাছে দু’বেলা দুমুঠো ভাত যেখানে অনিয়মিত সেখানে তাদের কাছে শীত কাপড় কেনা কঠিন। আমাদের দেশে বাস, রেলষ্টেশন, উড়ালসেতু, খোলা আকাশের নীচে অনেক অসহায় ছিন্নমূল মানুষের বসবাস। নদী ভাঙন অথবা অন্য কারণে ভূমিহীন, ছিন্নমূল মানুষ জীবিকার সন্ধানে বিভাগীয় শহর বিশেষত ঢাকা ও চট্টগ্রামে বেশী আসে। বস্তি, খোলা আকাশের নীচে এদের অনেকের বসবাস। উত্তরবঙ্গ ও গ্রামীণ এলাকার গরীব অসহায় মানুষেরা কনকনে শীতের দাপটে জবুথবু। খেটে খাওয়া মানুষগুলো কনকনে শীতের জন্য কাজে যেতে না পারায় ঠিকমত আহারও জোটেনা। ক্ষুধার রাজ্যে শীতের হানা খোলা আকাশের নীচে কিংবা গ্রামে বসবাসকারী এসব মানুষদের শীতের কাছে অসহায় সমর্পণ করা ছাড়া উপায় নেই। শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে আমরা যখন কম্বলের নীচে ঘুমিয়ে তখন কনকনে ঠাণ্ডায় খোলা আকাশের নীচে বাস করা মানুষগুলো কাঁপছে। শীতের দাপটে জবুথবু হয়ে ঘুমোতে পারেনা। শহর ও গ্রামের অসহায় ছিন্নমূল মানুষেরা খড়, লাকড়ি, কাগজ, বস্তা জ্বালিয়ে সাময়িক শীত নিবারণ করার চেষ্টা করে। এখানেও আছে ঝুঁকি আগুন পোহাতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শিশু, বৃদ্ধরা নানা শীতজনিত রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করে। মানুষ মানুষের জন্য। মানুষের প্রতি মানুষের অবারিত ভালোবাসা পারে তাদের পাশে দাড়াতে। এসব অসহায়, ছিন্নমূল শীতার্তদের পাশে আমাদের দাঁড়ানো উচিত। আমাদের সমাজের বিত্তবান ও সামর্থবান ও মানবতাবাদীরা যদি এগিয়ে এসে নিজ অবস্থান থেকে সাধ্যমত শীতবস্ত্র বিতরণ বা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তাহলে কনকনে শীতের প্রকোপ থেকে এসব মানুষ বাঁচতে পারে। একটি শীতবস্ত্র তেমন দামী না হলেও অসহায়দের জন্য তা শীতের প্রকোপ অনেক সময় মৃত্যু থেকে বাঁচার অবলম্বন। শীর্তাতদের প্রতি আমাদের একটু উঞ্চ ভালোবাসা করুণ মুখে হাসি ফোটায়,কষ্ট লাঘব করে। অনেক মানবতার ফেরিওয়ালা তরুণেরা পুরাতন শীতবস্ত্র সংগ্রহ করে অসহায়দের মাঝে বিতরণ করেন।
সরকার, অনেক সামাজিক সংগঠন, ব্যক্তিগত উদ্যোগে অসহায়দের মাঝে শীতকাপড় বিতরণ করেন। খোলা আকাশের নীচে শীতে কাঁপতে থাকা মানুষগুলোকে শীতবস্ত্র দেওয়া সময় তাদের চোখেমুখে অদ্ভুত এক স্বর্গীয় হাসি ফোটে, কৃতজ্ঞতায় নুয়ে পড়েন দেহ মন। যে হাসি তৃপ্তি, কৃতজ্ঞতা, ভালোবাসা,মানবতার। আমাদের দেশে শিল্পপতি, বিত্তবানের সংখ্যা কম নয়। মানবতার কল্যাণে যদি সবাই অসহায়ের পাশে দাঁড়াই তাহলে আমাদের দেশে কোন মানুষ শীতে কষ্ট পাবেনা। বাস, রেলষ্টেশন, খোলা আকাশের নীচে শীতের প্রকোপে অসহায় কোন মানুষের করুণ চেহারা দেখতে হবেনা। দেশ, মাটি ও মানুষের ভালোবাসা ও মানবতার কল্যণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। শীতার্তদের জন্য আমাদের সহযোগিতা ও উঞ্চ ভালোবাসা পারে তাদের কষ্ট দুর করতে।