শীতবস্ত্রের দখলে হকার্স মার্কেট

0
শীতবস্ত্রের দখলে  হকার্স মার্কেট

নগরের জহুর হকার্স মার্কেট এখন শীতবস্ত্রের দখলে। নতুন-পুরোনো শীতের পোশাকের জন্য মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে সব শ্রেণির ক্রেতার পছন্দের শীর্ষে এই মার্কেট।
বরাবরের মতো এ বছরও আমদানি করা পুরোনো শীতের পোশাকের পাশাপাশি নতুন পরিধেয় সামগ্রী মজুদ করেছেন দোকানিরা। তরুণ-তরুণী আর শিশু-কিশোরদের পোশাকই বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
বর্তমানে জাপান, কোরিয়া ও তাইওয়ান থেকে পুরাতন কাপড় আমদানি হয়ে থাকে। বছরের শুরুতে কাপড় আমদানির জন্য এলসি করা হয়। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের মধ্যে কাপড় চলে আসে চট্টগ্রাম বন্দরে। খবর বাংলানিউজের
ব্যবসায়ীরা জানান, শীতবস্ত্রের মধ্যে ৮ থেকে ১০টি আইটেম বন্দর দিয়ে আমদানি করা হয়। খালাসের পর চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে গুদামে রাখা হয়। সেখান থেকে দেশের পার্বত্যাঞ্চল ও উত্তরবঙ্গে শীতবস্ত্র সরবরাহ দেওয়া হয়। তবে দেশের বাজারে পুরোনো শীতবস্ত্রের চাহিদা এখন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
একসময় পুরোনো কাপড়ের ব্যবসা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। কোটা পদ্ধতি চালু করায় অন্যান্য জেলার ব্যবসায়ীরা লাইসেন্স নিয়ে এই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন।
পুরোনো কাপড় আমদানিকারকরা জানান, এই কাপড়ের ব্যবসা আগের মতো নেই। কোটা পদ্ধতির কারণে আমদানিকারকের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু কাপড়ের চাহিদা কমে গেছে। পুরোনো কাপড় আমদানির জন্য ৬ হাজার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এক বছরের জন্য এই লাইসেন্স প্রদান করা হয়। একজন লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ী এক লাখ টাকার বেশি কাপড় আমদানি করতে পারেন না।পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, পুরোনো শীতবস্ত্রের প্রধান বাজার উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা। কম দামে কেনার সুযোগ থাকায় এসব এলাকার দরিদ্র মানুষের মধ্যে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমদানি করা পুরোনো শীতবস্ত্রের ৮০ শতাংশ উত্তরাঞ্চলের শীতপ্রবণ এলাকাগুলোতে বিক্রি হয়।
আমদানিকারক মো. নাছির উদ্দিন বলেন, পুরোনো শীতবস্ত্রের চাহিদা কমে গেছে। গত বছর আমদানি করা কাপড় এখনও গুদামে আছে। তারপরও নতুন করে আমদানি হয়েছে। ফলে দাম এবার ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই থাকবে।
এদিকে নগরের অভিজাত বিপণিকেন্দ্র থেকে শুরু করে ফুটপাত পর্যন্ত এখন কেনাকাটা চলছে শীতের পোশাকের। ছেলেদের কোট, ব্লেজার, জ্যাকেট, সোয়েটার, কানটুপি, মাফলার, মেয়েদের কার্ডিগান, শাল, ওড়না আর শিশুদের বিভিন্ন রঙের বাহারি শীতের কাপড় বিক্রি হচ্ছে বেশি। একই সঙ্গে লেপ-তোশক ও কম্বলের চাহিদা বেড়েছে।
জহুর হকার্স মার্কেটে ছোট-বড় সব বয়সের রেডিমেইড ব্লেজার ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে মানভেদে ৪ হাজার টাকা দামেও বিক্রি হচ্ছে। নারীদের জন্য বাহারি ডিজাইনের সোয়েটার, জ্যাকেট ও চাদর তুলেছেন দোকানিরা।
মেয়েদের সোয়েটারের দাম মানভেদে ১০০ থেকে ৯০০ টাকা, ছেলেদের সোয়েটার ১০০ থেকে ৮০০ টাকা, ছেলেদের জ্যাকেট ৩০০ থেকে ৪০০০ টাকা, বাচ্চাদের সোয়েটার ৩০ থেকে ৭০০ টাকা, হাতের মোজা ৩০ থেকে ১৫০ টাকা। এ ছাড়া মানভেদে সাধারণ টুপি ৪০ থেকে ১০০ টাকা ও মাফলার ৫০ থেকে ২৫০ টাকায় মিলছে। মানভেদে বিভিন্ন কম্বল ১০০ থেকে শুরু করে ৫০০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
নগরে প্রায় ১০ হাজার হকার রয়েছে। জহুর হকার্স মার্কেটের আশপাশে কোতোয়ালি থানার মোড়, রিয়াজউদ্দিন বাজারের উভয়পাশে ভাসমান হকাররা শীতের পোশাক বিক্রি করছেন। তিন পার্বত্য জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা পাইকারি বাজারে আগেভাগেই শীতের কাপড়ের অর্ডার দিয়ে রেখেছিলেন। তারা এসব কাপড় নিজ নিজ এলাকায় নিয়ে যাচ্ছেন।