রাঙ্গুনিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার মুখে রণাঙ্গনের গল্প শুনল শিক্ষার্থীরা

192

মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশে রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা শুনছেন মুক্তিযোদ্ধাদের মুখে রণাঙ্গনের নানা গল্প। ৭ম শ্রেণির বাংলা পাঠ্য বইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে জানি একটি অধ্যায় রয়েছে। এর আলোকে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কয়েকটি দলে ভাগ করে একজন শিক্ষকের নেতৃত্বে স্থানীয় এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বা প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার নিকটজন বা মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা আছে এমন ব্যক্তিদের কাছে যাচ্ছেন তারা। রণাঙ্গনের গল্প শুনে শিক্ষার্থীদের দেয়া হচ্ছে নাম্বার। এজন্য মুক্তিযোদ্ধাদের মুখ থেকে ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শোনাতে তিনজন মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এ আয়োজন করছে উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। গত ১৭ অক্টোবর রাঙ্গুনিয়ার বঙ্গবন্ধু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে জানি শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রণাঙ্গনের নানা কাহিনী শুনাতে এদিন বিদ্যালয়ে আসেন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ও মুক্তিযুদ্ধকালীন রাঙ্গুনিয়ার কমান্ডার মো. নুরুল আলম।
তিনি ছাড়াও শিক্ষার্থীদের রণাঙ্গনের নানা কাহিনী শুনান মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জনকারী ও বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা জহির আহমদ চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা, মাস্টার নুরুল হুদা, শামসুল আলম ও মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহেরের মেয়ে শামীমা সুলতানা। গল্প শুনাতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো আদর্শিক নেতা হতে হবে। সত্যবাদী হতে হবে, তার আদর্শ ধারণ করে তার মতো দৃঢ়চেতা, ঈমানদার, দূরদর্শী নেতৃত্বের গুণাবলী অর্জন করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে লালন ও ধারণ করে নিজেকে দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কাজে-কর্মে, চিন্তাচেতনায় দেশপ্রেম থাকতে হবে। নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে সরকারের এ ধরণের কার্যক্রম প্রশংসার দাবীদার। এর ফলে মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের আত্মত্যাগের কাহিনি শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে জানতে পারবে। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নুরুল আবছার বলেন, বাংলা বইয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে জানি বিষয়ক শিখনফল অর্জনে বিশেষ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ আয়োজন করা হয়েছে।
উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সপ্তম শ্রেণির শিক্ষাথীরা দলগতভাবে ভাগ হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মুখে রণাঙ্গনের গল্প শুনে ভিডিও চিত্র ও লিখিত প্রতিবেদন তৈরি করবেন। এই কার্যক্রমের জন্য তাদের মোট ২০ নাম্বার দেয়া হবে। এ নাম্বার সপ্তম শ্রেণির বাংলা ধারাবাহিক মূল্যায়ণের অংশ হিসেবে যোগ হবে। উপজেলার প্রতিটি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষক নুরুল হুদা বলেন, এ কর্মসূচির ফলে একজন শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস শুনার সুযোগ পাচ্ছে। এতে করে এ শিক্ষার্থী এর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে দেশ প্রেমে উদ্ধুব্ধ হবে। এভাবে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জীবন্ত হয়ে উঠবে নতুন প্রজন্মের মাধ্যমে।