রাঙামাটিতে ১০ একর পাহাড়জুড়ে ২০ প্রজাতির ফলের বাগান সুশান্তের

14

এম কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি

আম, জাম, কলা, কাঁঠাল, লিচু, জাম্বুরা, লটকন, আমলকি, তেঁতুল, রেডলেডি, আমলকি, রামবুটান, আপেল, দারুচিনি, পেঁপে, সুন্দরী কুল, দেশি বড়ই, পেয়ারা, কাশ্মিরি কুল, আপেল কুল, তেজপাতা, আলু বোখরা, মাল্টা ও ড্রাগন- এ যেন এক টুকরো বাগানে ফলের উৎসব। চলতি মৌসুমে গাছে ফলেছে সুন্দরী কুল, কাশ্মিরি বড়ই, ড্রাগন ফল ও আপেল কুল।
রাঙামাটি সদর উপজেলার মগবান ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সোনারাম কার্Ÿারী পাড়ার কৃষি উদ্যোক্তা সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা এই বাহারি ফলের বাগানের স্বপ্নদ্রষ্টা। তিনি ১০ একর পাহাড়ি জায়গায় ফলের বাগান সৃষ্টির মাধ্যমে অন্যদের কাছে হয়ে উঠেছেন কৃষি শিক্ষকের মতই।
পার্বত্য চট্টগ্রামে সম্ভাবনাময় ফলজ ও বনজ এবং ওষুধি গাছের বাগানের জন্য হাজার হাজার পাহাড়ি পতিত জমি পড়ে আছে। কৃষি উদ্যোক্তা সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা সেই পরিত্যক্ত পাহাড়ি জমিতে গড়ে তুলেছেন বাহারি ফলের বাগান। সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যার মত উদ্যোগ নিয়ে বাগান করলে পার্বত্য চট্টগ্রামে সোনা ফলানো সম্ভব হত। সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা তার নিজস্ব প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেছেন বিশাল ফলের বাগান। তার বাগানে নেই এমন কোনো ফল নেই। বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন প্রজাতির ফলের সমারোহ সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যার বাগানে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মৌসুমী ফলের মধ্যে ১২ মাসে যে সকল ফল বাজারে পাওয়া যায় তার বেশির ভাগ ফলই আছে সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যার বাগানে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে মিল রেখে সাজানো হয়েছে তার ফলের বাগানটি। তার এই ফলের বাগান যে একবার দেখবে মন জুড়িয়ে যাবে। নিজস্ব ১০ একর পাহাড়ি জমিতে রয়েছে প্রায় ২০ প্রজাতির মৌসুমী ফল।
কৃষি উদ্যোক্তা সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা এই প্রতিবেদককে বলেন, ২০১৬ সাল থেকে স্বল্প পরিসরে ফলের বাগান শুরু করি। ধীরে ধীরে বাগানের পরিধি বাড়াতে থাকি। ২০২১ সালের দিকে এসে নিজ প্রচেষ্টায় ১০ একর পাহাড়ি জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফলের চাষ করে স্বাবলম্বী। তিনি আরো জানান, নিজ উদ্যোগে ২০ প্রজাতির ফলের বাগান থেকে এখন অনেক টাকা উপার্জন করি। ২০১৬ সালে বাগান করার পর থেকে এই পর্যন্ত সরকারিভাবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে মাত্র ১৫০টি মাল্টার চারা পেয়েছেন। এ ছাড়া আর কোনো সহযোগিতা আমি পাইনি সরকারি বা বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান থেকেই। তবুও আমি কাজ করছি বিষমুক্ত ও ফরমালিনমুক্ত অর্গানিক ফল উৎপাদন নিয়ে।
রাঙামাটি সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান ও মানিকছড়ি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শান্তনু খীসা বলেন, সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা নিজ উদ্যোগে ২০১৬ সাল থেকে বিভিন্ন প্রজাতির ফলের বাগান করে আসছেন। সত্যি তার এই উদ্যোগ অত্যন্ত মহৎ ও পরিশ্রমের। মৌসুমী ফলের চাষ করে বর্তমানে স্বাবলম্বী তিনি। তবে সরকারি বা বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরো উন্নতি করতে পারতেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সব সময় সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যাকে এ ব্যাপারে সুপরামর্শ দিয়ে আসছে। তিনি পুরস্কৃত হবার মত কাজ করেছেন। আমরা সব সময় তার পাশে আছি, আগামিতেও থাকবো।