যুক্তরাষ্ট্রের ‘ঋণের ফাঁদের’ অভিযোগ দায়িত্বজ্ঞানহীন : চীন

5

পূর্বদেশ ডেস্ক

বেইজিংয়ের ঋণদান কার্যক্রম উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ‘ঋণের ফাঁদে আটকে ফেলছে’, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন করা এমন মন্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে চীন। বুধবার ইয়েলেন জানিয়েছিলেন, বিশ্বব্যাপী চীনের কিছু কার্যক্রমে বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দেশটির ঋণ দেওয়া নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। ওই দিন এক শুনানিতে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের তিনি বলেছেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ঋণ দেওয়া ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে চীনের প্রভাব ঠেকাতে ওয়াশিংটন কঠিন পরিশ্রম করছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবকাঠামো নির্মাণে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে হাজার হাজার কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে চীন, কিন্তু অনেক প্রকল্প প্রত্যাশিত লাভের মুখ না দেখায় ২০১৬ সাল থেকে ঋণ দেওয়ার পরিমাণ ধীরে ধীরে কমিয়ে এনেছে।
বুধবার ইয়েলেন বলেছেন, ‘চীন যুক্ত আছে বিশ্বব্যাপী এমন কিছু কার্যক্রম নিয়ে আমি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন, (তারা) দেশগুলোর সঙ্গে এমনভাবে জড়াচ্ছে তাতে ওই দেশগুলোতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে না এবং তারা ঋণের ফাঁদে আটকা পড়ে যাচ্ছে’।
এর জবাবে বৃহস্পতিবার চীন সরকার বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কারণে বৈশ্বিক ঋণ সমস্যাসগুলো আরও জটিল হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ কর্তৃক সুদের হার ‘নজিরবিহীন হারে’ বাড়ানোই এর কারণ।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বৃহস্পতিবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অযৌক্তিক অভিযোগ আমরা গ্রহণ করবো না। দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য না করে ও অন্য দেশগুলোর দিকে আঙ্গুল না তুলে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সাহায্য করার জন্য বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করা’।
চীন জানিয়েছে, তারা সব সময় আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ করেছে এবং উন্মুক্ততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিনিয়োগ ও অর্থায়নে সহযোগিতা করেছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত পশ্চিমা এক গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চীন ২০০৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল ২২টি দেশকে অর্থনৈতিক সংকটের হাত থেকে উদ্ধারে ২৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করেছে; সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই পরিমাণ আরও বেড়েছে কারণ ‘বেল্ট এন্ড রোড’ অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় করা ঋণ পরিশোধে আরও কয়েকটি দেশ সংগ্রাম করছে। খবর বিডিনিউজের
চীন এখন জাম্বিয়া, ঘানা ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলোর সঙ্গে ঋণ পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা করছে। কিন্তু এই প্রক্রিয়া ঝুলিয়ে রাখায় তাদের ব্যাপক সমালোচনা করেছে বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) । এর প্রতিক্রিয়ায় চীন বিপদে পড়া দেশগুলোকে বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফের দেওয়া ঋণের পুরোটা বা আংশিক মওকুফে প্রতিষ্ঠানগুলির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।