মৃত্যুর কাছে হার মানলেন ধর্ষণের শিকার অগ্নিদগ্ধ সেই নারী

28

ধর্ষণ মামলার শুনানিতে অংশ নিতে যাওয়ার পথে অভিযুক্তদের দেওয়া আগুনের সঙ্গে ২ দিনের লড়াই শেষ হলো উত্তর প্রদেশের উন্নাও জেলার সেই নারীর। শুক্রবার রাত ১১টা ৪০ নাগাদ দিল্লি সফদরজং হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তার। একদিন আগে বৃহস্পতিবার আদালতে যাওয়ার পথে তাকে পুড়িয়ে মারা চেষ্টা করে ধর্ষণ মামলার অভিযুক্তরা। সে সময় চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরের ৯০ শতাংশই পুড়ে গেছে। ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, উন্নাও জেলার ওই নারী (২৩) চলতি বছরের মার্চে তার গ্রামের দুই পুরুষের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছিলেন। শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার আদালতে যাচ্ছিলেন তিনি।
বাড়ি থেকে বের হয়ে একটি ট্রেন স্টেশনে পৌঁছালে অভিযুক্ত শিবম ত্রিবেদীওসহ পাঁচজন তাকে জোর করে একটি মাঠে নিয়ে যায়। সেখানেই তারা তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর পাঁচ দিন আগে শিবম জামিনে মুক্ত হয়। ধর্ষণের আরেক অভিযুক্ত শুভম ত্রিবেদীও ওই হামলাকারীদের মধ্যে ছিল বলে জানা গেছে।
পরে পুলিশ এসে ওই নারীকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করায়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে লক্ষ্ণৌয়ের ট্রমা সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়। পরে তাকে দিলি­র সফদরজং হাসপাতালে নেওয়া হয়। সফদরজং হাসপাতালের বার্নস অ্যান্ড প্লাস্টিক বিভাগের প্রধান চিকিৎসক শলভ কুমার বলেন, ‘তিনি রাত ১১ টা ১০ নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং আমরা তাকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছি, তবে তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। রাত ১১টা ৪০ মিনিটে মারা যান তিনি।’ ভারতে প্রায়শই যৌন সহিংসতার শিকার হয় নারীরা। ২০১৮ সালে থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনের এক জরিপ অনুযায়ী, নারীদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ এটি। অ্যাকটিভিস্টরা বলছেন, নারীর বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। গত সপ্তাহে দেশটিতে বেশ কয়েকটি ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা সামনে এসেছে। ঝাড়খণ্ডে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছেন এক নারী আইনজীবী।
রাজস্থানে ছয় বছরের এক শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। গত ২৭ নভেম্বর তেলেঙ্গানার হায়দ্রাবাদে ২৭ বছর বয়সী এক পশু চিকিৎসককে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে।