ভোগান্তি কমেছে বন্দর সড়কে

22

নিজস্ব প্রতিবেদক

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ চলাকালীন প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকতো নগরীর বন্দর সড়কে। এছাড়া সড়কটিতে অবৈধ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান টার্মিনালের কারণেও বারেকবিল্ডিং থেকে সল্টগোলা পর্যন্ত এলাকায় দীর্ঘ যানজট তৈরি হতো। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হতো জনগণকে।
তবে গত দুই মাস ধরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) ট্রাফিক বন্দর বিভাগের অভিযানের ফলে সড়কে কমেছে যানজট, সেইসাথে কমেছে জনদুর্ভোগও। এতে আগের মত ওই এলাকায় আর যানজট তৈরি হয় না। অভিযানে গত দুই মাসে (নভেম্বর-ডিসেম্বর) ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ও অন্যান্য মিলিয়ে ২২৮টি পরিবহন আটক করে ট্রাফিক বন্দর বিভাগ। এসব অভিযানে নেতৃত্ব দেন সল্টগোলা এলাকার ট্রাফিক পরিদর্শক সুভাষ চন্দ্র দে। গত রোববার সরেজমিনে সল্টগোলা এলাকায় গেলে দেখা মেলেনি যানজটের পুরানো চিত্র, সড়কে দেখা গেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া। জানা গেছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর মাঝখানে টিনের বেড়া দেয়ার ফলে রাস্তা ছোট হয়ে যায়। পাশাপাশি সল্টগোলা রেলক্রসিং এলাকায় বন্দরের প্রবেশ গেটে সড়কে ট্রাক-কাভার্ডভ্যানের দীর্ঘ সারি তৈরি হতো। যার ফলে স্বাভাবিক গাড়ি চলাচল ব্যাহত হতো। তাছাড়া ওই সময় নির্মাণাধীন এক্সপ্রেসওয়ের নিচেও পার্কিং করা হতো ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ও প্রাইমমুভারের মত বড় পরিবহন। এতে রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে অন্যান্য যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হতো। এছাড়াও বন্দরগামী পরিবহনগুলোকে দীর্ঘক্ষণ সড়কে অপেক্ষায় থাকতে হতো। এতে শুধু পণ্য পরিবহন নয়, সাধারণ মানুষকেও চলাচলে দুর্ভোগে পড়তে হতো। কিন্তু বর্তমানে ট্রাফিক বিভাগের অভিযানের ফলে অবৈধভাবে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান আর পার্কিং করতে না পারায় যানজট তৈরি হয় না।
ট্রাফিক বিভাগের দেয়া তথ্যমতে, সল্টগোলা এলাকায় গত নভেম্বর মাসে অভিযান চালিয়ে ১৩৯টি পরিবহন আটক করা হয়। এছাড়া একই সময়ে ৯১টি পরিবহনের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়। ডিসেম্বর মাসে বাস-মিনিবাস ৫টি, ট্রাক/কাভার্ডভ্যান ২৬টি, পিকআপ ভ্যান ৩টি, হিউম্যান হলার ২টি, সিএনজি ট্যাক্সি ১১টি, মোটরসাইকেল ১১টি, প্রাইমমুভার ৬টি ও টমটম ২৫টিসহ ৮৯টি পরিবহন আটক করা হয়। এছাড়া একই সময়ে ৫৭টি পরিবহনের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কে অবৈধভাবে পার্কিং করা কোনো ট্রাক-কাভার্ডভ্যান আর নেই। অবৈধ টার্মিনালেরও দেখা মেলেনি। আগে টার্মিনাল থাকার সুবাধে টোল সড়ক থেকে নামতে ছোট ছোট টং দোকান আর ভাতঘর থাকলেও এখন সেসবও উচ্ছেদ করে দিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ।
বন্দরে পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত চালক আজমির শাহ পূর্বদেশকে বলেন, এখন আগের মত রাস্তার পাশে গাড়ি পার্কিং করা যায় না। আগে কিছু চাঁদা দিলে পার্কিং করা যেতো, কিন্তু নিয়মিত অভিযানের ফলে তা আর সম্ভব হয় না।
সল্টগোলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক সুভাষ চন্দ্র দে বলেন, আমি এই এলাকায় যোগদান করার আগে সড়কে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা ছিল। যার পরিবর্তন এখন দেখতে পাচ্ছেন। অবৈধ টার্মিনাল, চাঁদাবাজিসহ যানজটে নাকাল অবস্থা থেকে বর্তমান অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। তারপরও অভিযান চলমান রেখেছি।
সিএমপি ট্রাফিক বন্দর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান পূর্বদেশকে বলেন, যানজট কমিয়ে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ট্রাফিক বন্দর বিভাগের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি। আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।