ভূমিকম্পে লন্ডভন্ড তুরস্ক-সিরিয়া: নিহত ১২০০’র বেশি

35

পূর্বদেশ অনলাইন
সোমবার ভোরে ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল। প্রচণ্ড কম্পনে ঘুম ভেঙে যায় তুর্কিদের। ভূমিকম্পে অনুভূত হয় প্রতিবেশী সিরিয়া, সাইপ্রাস ও লেবাননেও। তুরস্ক ও সিরিয়ায় প্রাণহানি বাড়ছে হু হু করে। তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত তাদের দেশে ৬৫৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েক হাজার। এদিকে সিরিয়ায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮৬ জনে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। কয়েক মিনিট পর আবারও একাধিক আফটার শক। উৎপত্তিস্থল ছিল দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ খারমানমারাসের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে। এর গভীরতা ভূপৃষ্ঠে থেকে ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটারে। এমন পরিস্থিতিতে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে দেশটিতে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, কাহরামানমারাস, গাজিয়ানতেপ, সানলিউরফা, দিয়াবাকির, আদানা, আদিয়ামান, মালতা, হাতায় ও কিলিসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শহরগুলোর চারদিকে ধ্বংসস্তূপের চিত্র। ভবন ধসে অনেকে চাপা পড়েছে। নিখোঁজদের হন্য হয়ে খোঁজ করছে পরিবারের সদস্যরা। তুর্কি কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন পর্যন্ত তারা কয়েক হাজার আহতের খবর পেয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসার জোরালো আহ্বান জানানো হচ্ছে। এদিকে তুরস্কের কোথাও কোথাও তুষারপাত আর বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। কনকনে ঠান্ডা বাতাস পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। একজন উদ্ধারকারী বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় ইস্তাম্বুলের ফ্লাইট সাময়িক সময়ের জন্য বাতিল করা হয়েছে। এ অবস্থায় আমরা ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সহজে পৌঁছাতে পারছি না।এই পরিস্থিতিকে ট্র্যাজেডি আখ্যা দিয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান টুইট বার্তায় বলেন, ‘সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠবো আমরা’। নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন তিনি। দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে ইতোমধ্যে সব ধরনের সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্পে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তুরস্কের প্রতিবেশী দেশ সিরিয়াতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ভূমিকম্পে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আলেপ্পো, হামা, লাতাকিয়া ও তারতুসে নিহতে ছাড়িয়েছে দুই শতাধিক। আহত হয়েছেন অনেকে। হাসপাতালে লাশের মিছিল। সিএনএন আবহাওয়াবিদ ব্র্যান্ডন মিলার বলেছেন, ভূমিকম্পের কম্পন লেবানন পর্যন্ত কয়েকশ’ কিলোমিটার দূরে অনুভূত হতে পারে। সূত্র: সিএনএন, আল জাজিরা, বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান