ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা

10

আবেদ আমিরী, কর্ণফুলী

কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদের দুই প্রার্থীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। ভাইস চেয়ারম্যান পদে তালা প্রতীকের আবদুল হালিমসহ তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও চশমা প্রতীকের প্রার্থী আমির আহমদ ও উড়োজাহাজ প্রতীকের প্রার্থী মহিউদ্দিন মুরাদকে নিয়ে ভোটারদের মাঝে বেশি মাতামাতি উপজেলার সর্বত্র। ব্যাংকার আমির আহমদ রাজনীতি ও বয়সে প্রবীণ এবং দক্ষ রাজনীতিবিদ। সে তুলনায় মহিউদ্দিন মুরাদ একেবারে নবীন এবং উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি পদে দায়িত্বরত আছেন। তফশিল ঘোষণার পর থেকেই আমির আহমদ দলীয় নেতৃবৃন্দের আহবানে মাঠে সরব থাকলেও একেবারে শেষের দিকে নির্বাচনের মাঠে নামেন যুবলীগ নেতা মহিউদ্দিন মুরাদ। অল্প সময়েই তিনি ভোটারদের মাঝে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
জানা গেছে, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মননোয়ন বঞ্চিত হয়ে অভিমানী ছিলেন আমির আহমদ। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অনিচ্ছা সত্তে¡ও অংশ নিতে হয়েছে তাকে। উপজেলা আওয়ামী লীগ তাকে দলীয়ভাবে নির্বাচনের মাঠে টেনে নামিয়েছেন এবং শুরু থেকে তার বেশ গ্রহণযোগ্যতা ছিল। শুরু থেকে তিনি চেয়ারম্যান পদে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্ত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফারুক চৌধুরীর সাথে জোটবদ্ধভাবে প্রচার প্রচারণায় নামেন। কিন্তু ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে উপজেলার ৪ জন চেয়ারম্যানসহ দলের একটি অংশ বিরোধিতা করে আনারস প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী মোহাম্মদ আলীর পক্ষে কাজ করছেন।
আমির আহমদ দলীয় নৌকা প্রার্থীর সাথে জোটবদ্ধ থাকায় তিনিও ৪ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও দলের একাংশের বিরোধিতার মুখে পড়েছেন। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী মোহাম্মদ আলীর জন্য প্রচার প্রচারণার সাথে সাথে ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী মহিউদ্দিন মুরাদের জন্য প্রচার প্রচারণা করছেন ৪ চেয়ারম্যানসহ দলের একাংশের নেতাকর্মীরা। আমির আহমদের ব্যাপক জনসমর্থন থাকার পরও দলীয় বিভক্তির ফলে মহিউদ্দিন মুরাদ দ্রুতই পৌঁছে গেছেন ভোটারদের কাছে। এরপরও ভোটের হিসাবনিকাশে কে এগিয়ে আছে তা অনুমান করা মুশকিল। তবে তিনটি ইউনিয়নে আমির আহমদেও সমর্থন ভালো বলে ভোটারদের অভিমত। এরপর আমির আহমদদের কিছুটা বিপত্তি হতে পারে শিকলবাহা ইউনিয়নে। ওই ইউনিয়নে অন্য ইউনিয়নের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ভোটার রয়েছে। এরই মাঝে নিজস্ব কৌশলে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তালা প্রতীকের আবদুল হালিম।
এ বিষয়ে আমির আহমদ বলেন, তিনি উপজেলার লোকজনকে আগেও সেবা দিয়েছেন এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখতে চান। উপজেলার উন্নয়নের ধারাবাহিতকা ধরে রাখার ইচ্ছে থেকেই তিনি নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। আধুনিক একটি উপজেলা গঠনে তিনি ভূমিকা রাখতে চান। কর্ণফুলী উপজেলার স্বপ্নদ্রষ্টা প্রয়াত আখতারুজ্জমান চৌধুরী বাবু ও স্থানীয় এমপি ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জমান চৌধুরী জাবেদের হাতকে শক্তিশালী করতে চশমা প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য আহবান জানান তিনি।
মহিউদ্দিন মুরাদ বলেন, গত উপজেলা পরিষদে কি হয়েছে এবং কিভাবে চলেছে তা সবাই জানে। গত পরিষদ নিয়ে মানুষের একটা নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। তিনি নির্বাচিত হলে এসব ধারণা পরিবর্তন করে উন্নয়নে পুরো উপজেলাকে সমান গুরুত্ব দেয়া হবে। দলীয় সমর্থিত প্রার্থীর বিপক্ষে নির্বাচনে অংশ কেন নিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমির আহমদ ভাই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সাথে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তিনি নিজেও নৌকার বাইরে নন, কিন্তু নৌকার মাঝির বিষয়ে আপত্তি থাকায় এবং ওই প্রার্থীর সাথে জোটবদ্ধ হওয়ায় তিনি নির্বাচনে আমির আহমদের বিপরীতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তিনি সকলকে নিয়ে পথ চলতে চান বলে জানান।