বোট মালিক রাজীব দাসের ১৫ বছর কারাদন্ড

24

নিজস্ব প্রতিবেদক

পতেঙ্গা থানায় ১৪ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধারের মামলায় এক ইয়াবা কারবারির পৃথক ধারায় ১৫ বছরের কারাদন্ড হল। বোট মালিক রাজীব দাসকে দুই ধারায় বিভিন্ন মেয়াদে এ কারাদন্ড দেয়া হয় আদালতের আদেশে। একই সাথে তিনজন আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার বিকেলে চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার আদালত এ রায় দেন। রাজীব দাস পলাতক রয়েছেন।
খালাস প্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছেন, খোকন দাস, মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মো. সেকান্দার আলী। এ তিন আসামিও পলাতক।
এ বিষয়ে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে দায়িত্ব পালনকারী অতিরিক্ত মহানগর পিপি এডভোকেট মো. নোমান চৌধুরী জানান, আসামির বিরুদ্ধে মামলায় আনা অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ যথাযথভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। এ কারণে আদালতের বিচারক তাকে উল্লেখিত সাজা ও জরিমানা করেছেন।
আদালত থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রæয়ারির ঘটনা। ওইদিন দিবাগত রাত ১টার দিকে বন্দরের ১ নম্বর বয়ার অদূরে ‘এফবি রাজীব’ নামের কাঠের তৈরি একটি মাছ ধরার বোটের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হয় নৌবাহিনীর সদস্যদের। এসময় বোটটি থামতে সংকেত দিয়েছিল নৌবাহিনী। কিন্তু বোটটি কর্ণফুলী নদীর দিকে না এসে গতিপথ পরিবর্তন করে। এ সময় স্পিডবোট নিয়ে ধাওয়া করলে চোরাকারবারিরা বোটটি নিয়ে আনোয়ারার পারকি সৈকতের দিকে চলে যায়। পরে বোটে তল্লাশি চালিয়ে স্কচটেপ মোড়ানো প্যাকেটভর্তি ১৪ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। বোটটি নৌবাহিনীর ফ্লোটিলা জেটিতে (৪ নম্বর) নোঙর করা হয়। এরপর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক তপন কান্তি শর্মা ১৪ লাখ ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় পতেঙ্গা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। ইয়াবা উদ্ধারের ৭ মাস পর একই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর রাতে পতেঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের চট্টগ্রাম মেট্রো-উপ অঞ্চলের তৎকালীন তত্ত¡াবধায়ক চৌধুরী ইমরুল হাসান। মামলায় বোট মালিক রাজিব দাশ ও তার ভাই খোকন দাশ এবং জাহাঙ্গীর আলম ও ট্রলারের মাঝি মো. সেকান্দারকে আসামি করা হয়েছিল। আদালতে ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ জানান, পলাতক বোট মালিক রাজীব দাসের বিরুদ্ধে ১৯৯০ সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৫ ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়। একই আইনের ২১ ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও দুই হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। উভয় দন্ড একত্রে চলার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এতে ওই আসামিকে ১০ বছরের কারাভোগ করতে হবে।
অতিরিক্ত মহানগর পিপি এডভোকেট মো. নোমান চৌধুরী বলেন, মামলায় অন্য আসামি খোকন দাস, মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মো. সেকান্দার আলীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন সন্দেহাতীতভাবে অপরাধের অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারায় তাদের খালাস দিয়েছেন আদালত। জব্দকৃত বোট এফবি-রাজীব (লাইসেন্স নম্বর-৪৫২৮ এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর এফ-৯০২৮) বাজেয়াপ্ত করার আদেশও আসে আদালতের রায় থেকে।