বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি কমলো

10

পূর্বদেশ ডেস্ক

করোনার প্রভাব কমে আসার পর থেকেই বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহের প্রবৃদ্ধি বাড়ছিলো। টানা আট মাস ধরে বাড়তে বাড়তে ২০২২ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে সূচকটি ১১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশে উঠে। কিন্তু ফেব্রæয়ারি মাসে ফের ধাক্কা খেল বেসরকারি খাত। অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচকটি কমেছে শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ। এই মাসে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কমলেও জানুয়ারি মাসের তুলনায় ঋণ বিতরণ বেড়েছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। সাধারণত দেশের বিনিয়োগ বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান নিয়ামক হিসেবে মনে করা হয় বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহকে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, বিগত কয়েক মাস ধরে ঋণ বিতরণ বেড়েছে। এর ফলে ব্যাংকে এখন তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। এ কারণে চাহিদা অনুযায়ী ঋণ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে সামান্য প্রবৃদ্ধি কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের ফেব্রæয়ারির চেয়ে এই বছরের ফেব্রæয়ারিতে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ দশমিক শূন্য ৮৭ শতাংশ বেশি ঋণ পেয়েছেন।
যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে দেশে বিনিয়োগে মন্দা চলছে। এর অন্যতম প্রধান নিয়ামক বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের চিত্রও ছিল হতাশাজনক। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
২০২০ সালের দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর থেকেই প্রতি মাসেই কমতে থাকে প্রবৃদ্ধি। গত বছরের মে মাসে তা ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশে নেমে আসে, যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। অবশ্য এরপর থেকে বাড়ছে ঋণের প্রবৃদ্ধি। গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহের প্রবৃদ্ধি হয় ১০ দশমিক ৬৮ শতাংশ। তার আগের মাস নভেম্বরে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১০ দশমিক ১১ শতাংশ; অক্টোবরে ছিল ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ সেপ্টেম্বরে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
ফেব্রæয়ারি মাসে ঋণের প্রবৃদ্ধি সামান্য কমলেও সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বলেন, জানুয়ারির চেয়ে ফেব্রুয়ারিতে প্রবৃদ্ধি কমলেও টানা সাত আট মাস বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা অর্থনীতির জন্য ভালো খবর বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ফেব্রুয়ারি শেষে বেসরকারি খাতে মোট ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৭৮ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি শেষে ছিল ১১ লাখ ৫৩ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। এ হিসাবেই এক বছরে ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা।
অবশ্য চলতি বছরের জানুয়ারি শেষে বেসরকারি খাতে মোট ঋণ স্থিতি ছিল ১২ লাখ ৬৬ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের মে মাসে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকে, অর্থাৎ ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশে নেমে আসে।