বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন মেনন

39

একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে বক্তব্যের জন্য সমালোচনার মুখে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। রোববার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, বরিশাল জেলা পার্টির সম্মেলনে আমার একটি বক্তব্য সম্পর্কে জাতীয় রাজনীতি ও ১৪ দলের রাজনীতিতে একটা ভুল বার্তা গেছে। আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ উপস্থাপন না করে অংশ বিশেষ উত্থাপন করায় এই বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
আগের দিন শনিবার বরিশালে দলীয় ওই কর্মসূচিতে গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসেন ক্ষমতাসীন ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি নেতা মেনন।তিনি বলেছিলেন, আমিও নির্বাচিত হয়েছি। তারপরও আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, ওই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। এমনকি পরবর্তীতে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ভোট দিতে পারেনি দেশের মানুষ।
একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপি জোটের এতদিনের অভিযোগের সমর্থনে তার এ বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনা চলছে। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে ঢাকা-৮ আসনে তিন দফায় নির্বাচিত মেনন এবার মন্ত্রিত্ব না পেয়ে এখন এই কথা বলছেন বলে মন্তব্য করেন অনেকে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও তার এ বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছেন। খবর বিডিনিউজের
গত মন্ত্রিসভার সহকর্মী মেননের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, তিনি যদি বলেই থাকেন, আমার প্রশ্ন হচ্ছে এতদিন পরে কেন? এই সময়ে কেন? নির্বাচনটা তো অনেক আগে হয়ে গেছে। আরেক প্রশ্ন সবিনয়ে- মন্ত্রী হলে কি তিনি এ কথা বলতেন? আর কোনো কিছু বলতে চাই না।
মেনন কেন এ বক্তব্য দিয়েছেন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে তার কাছে জানতে চাওয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম সাহেব, সেটা আমরা তার কাছে জানতে চাইব।
কাদেরের এই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মাথায় দেওয়া ওই বিবৃতিতে মেনন বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এ যাবতকালের নির্বাচন ১৪ দলের সংগ্রামেরই ফসল এবং সরকারও গঠিত হয়েছে ১৪ দলের লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে। আজকে মৌলবাদ-সা¤প্রদায়িকতার যে বিপদ বিদ্যমান তাকে মোকাবেলা করতে ১৪ দলের ওই সংগ্রামকেই এগিয়ে নিতে হবে।
এর আগে জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর দেওয়া বক্তব্যেও একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছিলেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন মেনন।
ওই বক্তব্য উদ্ধৃত করে বিবৃতিতে বলা হয়, একাদশ সংসদের সফল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু অভিজ্ঞতাটি সুখকর নয়। বিএনপি-জামাত নির্বাচনে আসলেও নির্বাচনকে ভন্ডুল করা, নিদেন পক্ষে জাতীয় আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার কৌশল প্রয়োগ করেছে নির্বাচনে। … এটা যেমন সত্য তেমনি এ ধরনের পরিস্থিতিতে অতি উৎসাহী প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বাড়াবাড়ি করতে পারে। কিন্তু তাতে এই নির্বাচন অশুদ্ধ বা অবৈধ হয়ে যায় না।
শনিবারের বক্তব্য নিয়ে বিবৃতিতে মেনন বলেন, বক্তৃতায় আমি বলেছি, স্বাধীনতা উত্তরকাল থেকে এ যাবত জিয়া-এরশাদ-বিএনপি-জামাত আমলের ধারাবাহিক অনিয়ম অব্যবস্থাপনা ও ক্ষমতার অপব্যবহার ঘটেছে। বিভিন্ন সময় আমি প্রার্থী হিসেবে এ সকল ঘটনার সাক্ষী।
আমি বলেছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে মিলে ভোটাধিকার ও ভোটের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে আমরা যে লড়াই করেছি তা যেন বৃথা না যায়, সেজন্য নির্বাচনকে যথাযথ মর্যাদায় ফিরিয়ে আনতে হবে।