নারী চিকিৎসককে হত্যার দায় স্বীকার ঘাতক রেজার

3

ঢাকা প্রতিনিধি

রাজধানীর পান্থপথের একটি আবাসিক হোটেলে চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকাকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন মূলহোতা মো. রেজাউল করিম রেজা। গতকাল শনিবার তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিতে সম্মত হন রেজা। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলম তার জবানবন্দী রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) রাতে চট্টগ্রাম থেকে রেজাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।
উল্লেখ্য, বুধবার রাতে কলাবাগান থানা পুলিশ ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট নামের আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষ থেকে জান্নাতুল নাইম সিদ্দিকীর মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জান্নাতুলের স্বামী রেজাকে বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকার একটি মেস থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।
জান্নাতুল মগবাজারের ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গাইনি বিষয়ে একটি কোর্সে অধ্যায়নরত ছিলেন। পরিবারের অমতে ২০২০ সালের অক্টোবরে রেজা ও জান্নাতুল বিয়ে করেন। বিয়ে করলেও সংসার শুরু করা হয়ে ওঠেনি তাদের। বরং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করতেন তারা।
গত বুধবার সকালে জন্মদিন পালনের কথা বলে পান্থপথের ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট নামের আবাসিক হোটেলে নিয়ে জান্নাতুলকে হত্যা করেন রেজা। এ ঘটনায় নিহত জান্নাতুলের বাবা ডা. শফিকুল আলম বাদি হয়ে রেজার বিরুদ্ধে কলাবাগান থানায় মামলা করেন। এ মামলায় বৃহস্পতিবার রাতে তাকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।
শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, রেজা একাধিক নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর জেরেই জান্নাতুলকে হত্যা করা হয়। এদিন দুপুরে রেজাকে কলাবাগান থানায় সোপর্দ করে র‌্যাব।
কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, শনিবার সকালে রেজাকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। দুই বছর বিয়ে করেও সংসার শুরু করতে না পারায় ক্ষোভ ছিল রেজার। এ ছাড়া গত ফেব্রুয়ারিতে তার ব্যাংকের চাকরি চলে যাওয়ার পর থেকে স্ত্রী তাকে ছেড়ে যাওয়ার হুমকি দিতেন। এসব নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এসব কারণেই স্ত্রীকে হত্যা করেছেন বলে রেজা স্বীকার করেছেন।