নাগরিকত্ব বিল নিয়ে ধর্মঘটের ডাক আসাম গণপরিষদের

33

ভারতের নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন-২০১৬ নিয়ে বিজেপি জোট থেকে সরে যাওয়ার পর নতুন করে এ নিয়ে সরব হয়েছে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল আসাম গণপরিষদ (এজিপি)। দলটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ বিলের প্রতিবাদে অনশন ধর্মঘটে যাবে তাদের তাদের এমএলএ বা বিধায়করা। সোমবার এজিপি জানিয়েছে, আগামী ২৪ জানুয়ারি তাদের ১২ জন বিধায়ক ১০ ঘণ্টার অনশন ধর্মঘট পালন করবেন। নাগরিকত্ব বিল নিয়ে আন্দোলনকারী অন্য দলগুলোর সঙ্গে যোগ দেবেন তারা।
নাগরিকত্ব বিল নিয়ে আপত্তি জানিয়ে এরইমধ্যে আসামে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জোট থেকে এরইমধ্যে বেরিয়ে গেছে এজিপি। লোকসভায় বিলটি উত্থাপন ও পাসের আগের দিন গত ৭ জানুয়ারি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন দলটির তিন সদস্য। বিলটিতে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে প্রবেশকারী অমুসলিমদের (হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, শিখ ও খ্রিস্টান স¤প্রদায়) নাগরিকত্বের বিধান রাখা হয়েছে। বিরোধীরা বলছে, এই আইনটি ১৯৮৫ সালের আসাম অ্যাকর্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ১৯৮৫ সালের আসাম অ্যাকর্ডে বলা হয়েছিল, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ থেকে যারা আসামে বাস করছে,তারাই শুধু নাগরিকত্ব পাবে। কিন্তু বিল নিয়ে আসামে তীব্র প্রতিবাদ রয়েছে।
রাজ্যের ছয়টি জাতিগত গোষ্ঠীকে শিডিউলড ট্রাইব (তফশিলি উপজাতি) হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে গত ১১ জানুয়ারি বন্ধ পালন করছে স্থানীয় আদিবাসী সংগঠনগুলো। আসামের যে ৬টি জনগোষ্ঠীকে সরকার তফশিলি উপজাতির মর্যাদা দিতে চাইছে সেগুলি হলো আহোম, মটক, মরান, চুটিয়া, কোচ-রাজবংশী এবং আদিবাসী তথা চা সম্প্রদায়। আদিবাসীদের সংগঠনগুলোর জোট দ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি অব দ্য ট্রাইবাল অর্গানাইজেশনের অভিযোগ, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার রাজ্যের প্রকৃত আদিবাসীদের বঞ্চিত করে ওই ৬ জনগোষ্ঠীকে শিডিউল ট্রাইবস মর্যাদা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
স্থানীয় আদিবাসীদের আশঙ্কা, এ বিলের ফলে বিপুল সংখ্যক অবৈধ অভিবাসী ভারতের নাগরিকত্ব পাবে। আর এতে করে তারা সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে, হুমকিতে পড়বে তাদরে নৃতাত্ত্বিক পরিচয়।
আসামের এজিপি’র মতো মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম ও ত্রিপুরাতেও নাগরিকত্ব বিল নিয়ে বিজেপি’র মিত্ররা বিরোধিতা করছে। আর মনিপুরে খোদ স্থানীয় বিজেপি’র পক্ষ থেকে এই বিলের বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠেছে। এদিকে বিজেপি থেকে নির্বাচিত আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়ালকে দলত্যাগের আহব্বান জানিয়েছে কংগ্রেস। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সর্বানন্দ সানোয়াল বিজেপি ছাড়লে কংগ্রেস তাকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে বহাল রাখবে। আসামে কংগ্রেসের পার্লামেন্টারি দলের নেতা দেবব্রত সাইকিয়া বলেন, সানোয়াল যদি অন্তত ৪০ জন বিধায়ককে নিয়ে আসতে পারেন তাহলে আমরা তাকে নতুন করে রাজ্য সরকার গঠনে হিসেবে সমর্থন দেবো। সূত্র: ডেকান হেরাল্ড।