‘জাতীয়করণ প্রক্রিয়া শুরু করতে ধাক্কা দিতে হবে’

30

বেসরকারি স্কুল-কলেজ জাতীয়করণে অর্থের কোনো সমস্যা না থাকলেও প্রক্রিয়াগত এবং প্রশাসনিক জটিলতার কারণেই বিষয়টি আটকে আছে বলে মনে করেন শিক্ষকরা। তারা বলছেন, প্রক্রিয়াটি সচল করতে প্রয়োজনে ‘ধাক্কা’ দেওয়া হবে, আর সেই ধাক্কাটা হচ্ছে আন্দোলন।
তবে শিক্ষকরা আশা প্রকাশ করেছেন, ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের আগেই জাতীয়করণের ঘোষণা পাওয়া যাবে।
শিক্ষক দিবস উপলক্ষে শনিবার পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান মিলনায়তনে বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়নের আলোচনা সভায় বক্তাদের কাছ থেকে এসব কথা আসে। খবর বিডিনিউজের
সভায় ইউনিয়নের মহাসচিব জসিম উদ্দিন সিকদার ‘শিক্ষা জাতীয়করণ এখন সময়ের দাবি’ শীর্ষক এক প্রবন্ধে বলেন, “দেশে ২৮ হাজারেরও বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখানে পাঁচ লাখেরও বেশি শিক্ষক-কর্মচারী চাকরি করছেন। তারা পূর্ণ সরকারি সুযোগ-সুবিধা পান না। এই বৈষম্যের জন্য তারা আজ হতাশাগ্রস্ত। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেধাবীরা আসতে চায় না। ফলে শিক্ষার মান আশানুরূপ উন্নত হচ্ছে না।”
তিনি বলেন, “জাতীয়করণে কোনো সমস্যা আছে বলে মনে হয় না। কেউ কেউ বলছেন, অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে জাতীয়করণ সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু বিষয়টি সঠিক না। কারণ শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যয়ের সক্ষমতা সরকারের আছে। তাছাড়া একযোগে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণে সরকারের তেমন বাড়তি ব্যয়ের প্রয়োজনও হবে না। “তবে জাতীয়করণে সমস্যা হল সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও দক্ষ শিক্ষা প্রশাসনের অভাব। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার এ ব্যাপারে আন্তরিকতার অভাব নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য প্রশাসনযন্ত্রের সক্রিয় উদ্যোগে এমন একটি মহতী কাজ সম্পন্ন হতে পারে বলে আমরা মনে করি।”
ইউনিয়নের সভাপতি আবুল বাশার হাওলাদার বলেন, “বেসরকারি স্কুল-কলেজগুলো জাতীয়করণে যে অর্থ লাগে সেই অর্থ আমাদের আছে। কারণ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে আমরা এখন অনেক সক্ষম। তাহলে সমস্যা কোথায়? সমস্যা হল এর প্রক্রিয়ায়, প্রশাসনিক জটিলতায়। এই প্রক্রিয়া সচল করার জন্য যদি ধাক্কা দেওয়া লাগে আমাদের সেই ধাক্কাই দিতে হবে। ধাক্কা দেওয়ার উপায় হল আন্দোলন।”
তিনি বেসরকারি স্কুল-কলেজের পরিচালনা পরিষদ বাতিল করার দাবি জানিয়ে বলেন, “বেসরকারি স্কুল-কলেজের পরিচালনা পরিষদের দ্বারা শিক্ষকরা প্রতিনিয়ত লাঞ্ছনা ও হয়রানির শিকার হচ্ছে। তবে জাতীয়করণ হয়ে গেলে এই সমস্যা থাকবে না।”
সাউথ-ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ ন ম মেশকাত উদ্দিন জাতীয়করণের দাবিতে সমর্থন জানিয়ে বলেন, “দেশের প্রায় ৯৭ ভাগ অসন্তুষ্ট শিক্ষক সমাজ নিয়ে জাতির মেরুদÐ সোজা হবে না। বিশ্বে আমাদের শিক্ষার ভাবমূর্তি সমুন্নত হবে না।”
বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়নের নির্বাহী সভাপতি মো. আব্দুস ছালাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এম অহিদুজ্জামান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক প্রমুখ।