চরম ঝুঁকিতে ইয়াংছা বাজার ও কানামাঝির ঘাট বেইলি সেতু

0
চরম ঝুঁকিতে ইয়াংছা বাজার ও  কানামাঝির ঘাট বেইলি সেতু

মো. নুরুল করিম আরমান, লামা

‘সেতুর দু-পাশে ‘ঝুঁকিপূর্ণ সেতু’, সর্বোচ্চ ৫ টন মালামাল গাড়িতে পরিবহন করা যাবে’-সড়ক ও জনপথ বিভাগের এমন বিজ্ঞপ্তি অমান্য করে এই দুই বেইলি সেতুর উপর দিয়ে পাঁচগুণেরও বেশি পণ্যবাহী যান চলাচল করছে। ফলে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া, বান্দরবান জেলার লামা ও আলীকদম উপজেলার সাথে সংযোগ স্থাপনকারী সড়কের ওপর ইয়াংছা সেতুটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বান্দরবান সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন জরাজীর্ণ এ সেতুতে স্বাভাবিক খুঁটির পাশাপাশি আলাদাভাবে লোহার পাইপ বেঁধে সচল রাখা হয়েছে। একই অবস্থা বিরাজ করছে লামা-আলীকদম সড়কের মাতামুহুরী নদীর কানামাঝির ঘাট এলাকার বেইলী সেতুটিও। বিশেষ করে চলতি মৌসুমে তামাক ও পাথর বোঝাই যান চলাচলের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ এ সেতু দু’টি যে কোনো সময় ভেঙে পড়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সড়কে চলাচলকারী যাত্রী, গাড়িচালক ও স্থানীয়রা।
জানা গেছে, বান্দরবান জেলার দূর্গম লামা ও আলীকদম উপজেলার সাধারণ মানুষের সড়কপথে যোগাযোগের একমাত্র পথ আলীকদম-লামা-ফাঁসিয়াখালী সড়ক। চকরিয়া উপজেলার বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের মানুষও ওই দুই উপজেলা সদরে যোগাযোগের জন্য এই সড়কটিকে ব্যবহার করেন। কিন্তু সেই সড়কের ইয়াংছা বাজার সংলগ্ন সেতুটির উপরের পাটাতনের বিভিন্ন অংশ ক্ষয়ে গেছে। এতে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় পাশে লাল পতাকা টাঙ্গিয়ে সামান্য মেরামতের কাজ করা হয়; কিন্তু এতে বিপদের ঝুঁকিটা রয়েই গেছে। কারণ ৫ টনের সেতুর উপর দিয়ে পাথর, ইট, তামাক ও কাঠ বোঝাই ২৫-৩০ টন ওজনের ভারী গাড়িও চলাচল করছে প্রতিনিয়ত।
সরেজমিনে ইয়াংছা গিয়ে দেখা যায়, বেইলি সেতুটি জরাজীর্ণ হওয়ায় সড়ক বিভাগ জোড়াতালি দিয়ে, মাঝে মধ্যে সংস্কার করে যান চলাচলের জন্য সচল রেখেছে। কিন্তু সেতুটি এতটাই জরাজীর্ণ যে, বেইলি সেতুকে টিকিয়ে রাখতে আলাদা লোহার পাইপের সাহায্যে ঠেস দিয়ে সেতুটি কোনো মতে চলছে। একই অবস্থা কানামাঝির ঘাট সেতুটিরও। ইয়াংছা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় ব্যবসায়ী আবুল কালাম, আওয়ামী যুব মহিলা লীগের সভাপতি রোকেয়া বেগম কাজলসহ অনেকে জানান, বর্তমানে ইয়াংছা এলাকার বেইলি সেতুটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ সেতুটি চালু রাখতে সেতুর স্বাভাবিক খুঁটির পাশাপাশি নিচের অংশে আলাদাভাবে পাইপ দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এরপরও প্রতিনিয়ত ২০-৩০ টনের বেশি যান চলাচলের কারণে যেকোনো সময় সেতুটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই এলাকার জনসাধারণের স্বার্থে সেতুটি জরুরি ভিত্তিতে পুনঃনির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে বলে জানান তারা।
এদিকে ইয়াংছা ও কানামাঝির ঘাটস্থ সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বান্দরবান সড়ক বিভাগের লামা উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী পুর্ণেন্দ্র বিকাশ চাকমা জানান, লামা উপজেলায় যেসব বেইলি সেতু রয়েছে, এর মধ্যে ইয়াংছা সেতুটি ৫০ মিটার দীর্ঘ। সেতুটি বর্তমানে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেতুটি সচল রাখতে আলাদাভাবে পাইপ দিয়ে ঠেস দিয়ে রাখা হয়। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রæত অনুমোদন সাপেক্ষে এই বেইলী সেতুটি ভেঙ্গে নতুন করে পাকা গার্ডার সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।