চন্দনাইশে লেবুর ফলন ভালো না হওয়ায় হতাশ কৃষকরা

29

মো. শাহাদাত হোসেন, চন্দনাইশ

চলতি মৌসুমে যথাসময়ে বৃষ্টিপাত না হওয়ায়, লেবুর ফলন ভাল হয়নি। ফলে মৌসুমের শুরু থেকেই লেবুর দাম ছিল বাড়তি। লেবু টকজাতীয় অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সমাদৃত ফল। দেশের সর্বত্রই কমবেশি লেবুর চাষ হয়ে থাকে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ লেবু হালকা দোঁআশ ও সু-নিষ্কাশিত জাতীয় মাটিতে লেবুর ফলন ভাল হয়। চন্দনাইশের পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর লেবুর বাগান রয়েছে। বৈশাখের প্রচন্ড তাপদাহে একটু লেবুমাখা শরবত মনে প্রশান্তি এনে দেয়। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসের তাপদাহে লেবুর শরবত খুবই স্বাস্থ্যসম্মত বলে মত ব্যক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। মৌসুমের শুরুতে তথা বৈশাখ মাসের শুরু থেকেই লেবুর দাম খুবই বাড়তি ছিল। প্রতিটি লেবু ১০-১২ টাকা বিক্রি হয়েছে খুচরা বাজারে। রমজান শুরু হওয়ার পর ফলন একটু বাড়তি পাওয়ার কারণে ৯০-১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ডজন। বাজারে লেবুর চাহিদা প্রচুর। চলতি মৌসুমের শুরুতে প্রচন্ড গরমের কারণে এবং সময়মত বৃষ্টি না হওয়ায় লেবুর ফলন ভাল হয়নি। উপজেলার পাহাড়ি এলাকা লর্ড এলাহাবাদ, দোহাজারী লালুটিয়া, ছৈয়দাবাদ, ধোপাছড়ি এসব এলাকায় প্রচুর পরিমাণে লেবুর বাগান রয়েছে। এসকল বাগানে লেবুর ফুল প্রচুর আসলেও যথাসময়ে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ফলন ভাল হয়নি বলে জানিয়েছেন লেবু চাষীরা। তবে মৌসুমের প্রথমদিকে লেবুর দাম বেশি থাকায় অনেকটা পুষিয়ে লাভের মুখ দেখছেন লেবু চাষীরা। উপজেলার পাহাড়ি এলাকা ছাড়াও গৃহস্থীর বাড়ির আঙিনায় অনেক লেবুর গাছ রয়েছে। এসকল লেবু বিক্রেতারা সংগ্রহ করে এনে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের বাদামতল, খাঁনহাট রেলস্টেশন, বাগিচাহাট, দোহাজারী রেল স্টেশন মাঠ, রৌশনহাট ও কমলমুন্সির হাটে প্রতিদিন কম-বেশী লেবুর বাজার বসে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, চন্দনাইশের কাঞ্চননগর, ৪১ লর্ড এলাহাবাদ, দোহাজারীর লালুটিয়া, ধোপাছড়ি পাহাড়ি এলাকায় ছোট-বড় ৫০টির অধিক লেবুর বাগান রয়েছে। এসব বাগানের মালিক ও শ্রমিকেরা ভোরে বাগান থেকে লেবু তুলে বাজারে এনে বিক্রি করে থাকে। লেবুর প্রতি ভার বর্তমানে ৮’শ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লেবু চাষী উত্তর জোয়ারার আবদুর রহিম, সিরাজুল ইসলাম, সৈয়দাবাদের কামাল উদ্দীন বলেছেন, তারা প্রত্যেকেই এক একটি বাগান নিয়ে লেবু ও অন্যান্য ফলজ বাগান করে যাচ্ছেন। চলতি মৌসুমে সময়মত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় লেবুর ফলন ভাল হয়নি। তারা জানান, চন্দনাইশে হিমাগারের অভাবে লেবু সংরক্ষণ করতে না পারায় বাগানে অনেক সময় লেবুতে পচন ধরে নষ্ট হয়। ফলে লোকসান গুণতে হয় কৃষকদের। তারা এলাকায় হিমাগার বা জুস ফ্যাক্টরি নির্মাণের জন্য বিত্তবান ও সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন। এতে বাগান মালিকেরা উপকৃত হওয়ার পাশাপাশি সরকার পাবে রাজস্ব, হ্রাস পাবে এলাকার বেকারত্ব।