চকরিয়ায় এশিয়ান হাসপাতালের এমডির বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ

4

চকরিয়া প্রতিনিধি

চকরিয়া পৌর সদরের থানা রাস্তার মাথায় অবস্থিত বেসরকারি চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান এশিয়ান হাসপাতালের এমডি’র বিরুদ্ধে ওই হাসপাতালের ফার্মেসি মালিকের ভাইকে মারধর ও টাকা লুটপাটের অভিযোগ তুলেছেন ফার্মেসি মালিক মনির উল্লাহ।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় চকরিয়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফার্মেসি মালিক দাবি করেন, ৭ লক্ষ টাকা অগ্রিম জামানত দিয়ে ৮ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া নিধারণপূর্বক ২০১১ সালের ১৭ অক্টোবর এশিয়ান হাসপাতালের অভ্যন্তরে নিচতলায় অবস্থিত ফার্মেসিটি ভাড়া নেয়ার জন্য ৭ বছর মেয়াদী একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি হয় হাসপাতালের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. মহিউদ্দিনের সাথে।
পরবর্তীতে ওই হাসপাতালের বৈধ কোন কাগজপত্র না থাকায় গত ২০১৩ সালের ২৮ এপ্রিল কক্সবাজারের তৎকালীন সিভিল সার্জন হাসপাতালটি সিলগালা করে দেন। এরপর থেকে হাসপাতালটি ১ বছর ধরে বন্ধ থাকায় হাসপাতালের তৎকালীন চেয়ারম্যান মাসিক ভাড়া ৮ হাজার টাকার স্থলে ৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেন ফার্মেসি মালিককে।
একপর্যায়ে শেয়ার হোল্ডারদের মধ্যে আর্থিক অনিয়মের কারণে দ্ব›েদ্বর সৃষ্টি হলে হাসপাতালটি বর্তমান এমডি শামশুল আলম ভাড়া নেন। তারপর থেকে ফার্মেসির মালিক মনির উল্লাহ নতুন এমডির কাছে যথাসময়ে ভাড়া পরিশোধ করে ফার্মেসি ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।
ফার্মেসি মালিক অভিযোগ করেন, দায়িত্ব নেয়ার পর হাসপাতালের এমডি শামসুল আলম চুক্তি নবায়নের কথা বলে আগের চুক্তি মোতাবেক ৮ হাজার টাকার স্থলে আরো এক হাজার টাকা বৃদ্ধি করে ৯ হাজার টাকা ভাড়া আদায় করেন। ওই ভাড়া ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত প্রদান করেন ফার্মেসি মালিক।
লিখিত বক্তব্যে ফার্মেসি মালিক দাবি করেন, হাসপাতালের সাথে চুক্তিপত্রে উল্লেখ রয়েছে ওই হাসপাতালে একটি মাত্র ফার্মেসি থাকার কথা। কিন্তু তিনি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় নতুনভাবে আরো একটি ফার্মেসি খুলে বসেন।
প্রথম গ্রহীতা এ বিষয়ে বতর্মান এমডিকে অবহিত করলে উভয় পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এর জেরে গত ২৯ ও ৩০ জুলাই ফার্মেসি মালিকের ভাই হামিদ উল্লাহকে নির্মমভাবে হামলা করে আহত করেন শামসুল আলম ও তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা। এতেও ক্ষান্ত না হয়ে দোকানের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেন তারা। বতর্মানে আহত হামিদ উল্লাহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরপর দুই বার হামলা করে দোকানের ক্যাশবাক্স থেকে নগদ ৬৫ হাজার ৮শত টাকা লুট ও দোকানের সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে ৩০ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ৯৫ হাজার ৮শত টাকা ক্ষতি করেন হাসপাতালের এমডি শামসুল আলম ও তার সহযোগীরা।
এ ঘটনায় ফার্মেসি মালিক মনির উল্লাহ বাদী হয়ে শামসুল আলমসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত নামা আরো ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার রাতে চকরিয়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। কিন্তু চকরিয়া থানা তার লিখিত এজাহারটি মামলা হিসেবে এন্ট্রি না করে শামসুল আলমের এক প্রভাবশালী ভাইয়ের প্রভাব খাটিয়ে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা নেয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী মনির উল্লাহ। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ স্থানীয় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ফার্মেসি মালিক মনির উল্লাহ।
অভিযোগের ব্যাপারে এশিয়ান হাসপাতালের বতর্মান এমডি শামসুল আলম বলেন, দোকানের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তাদের সাথে পুনরায় চুক্তি সম্পাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলছেন।
অপরদিকে ফার্মেসি মালিক মনির উল্লাহ দাবি করেন, চুক্তিপত্রে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পুনরায় নবায়নের কথা উল্লেখ থাকলেও বর্তমান এমডি তা করছেন না। তাছাড়া ফার্মেসি নেয়ার সময় বিভিন্ন কিস্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অগ্রিম জামানত দেয়া ৭ লক্ষ টাকাও বর্তমান এমডি শামসুল আলম ফেরত দিচ্ছেন না।