করোনা প্রতিরোধে ‘সম্পূর্ণ কার্যকর’ জাপানি ইনফ্লুয়েঞ্জার ওষুধ : চীন

190

চীন দাবি করেছে, জাপানের ফুজিফিল্ম হোল্ডিংস গ্রুপ অব কোম্পানির তৈরি করা একটি ইনফ্লুয়েঞ্জার ওষুধ নতুন করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে ‘সম্পূর্ণ কার্যকর’। বেইজিং ইতোমধ্যেই ফাবিপিরাভির (favipiravi) নামের ওষুধটি ব্যবহার করতে শুরু করেছে। ফুজিফিল্ম তোয়ামা কেমিক্যালের প্রস্তুতকৃত ওষুধটি অ্যাভিগান ব্র্যান্ড নামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। ওই ওষুধের ওপর উহানে পরিচালিত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রসঙ্গ তুলে ধরে ১৭ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে চীনা কর্তৃপক্ষ দাবি করে, ‘ওষুধটি খুবই নিরাপদ’। তবে এই ওষুধের কার্যকারিতার ব্যাপারে নিশ্চিত নয় জাপান। যথেষ্ট পরিমাণের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে এ নিয়ে কিছু বলতে নারাজ তারা।
ফুজিফিল্ম তোয়ামা ২০১৪ সালে ফাবিপিরাভির নামের ওষুধটি প্রস্তুত করে। গত ফেব্রæয়ারি মাস থেকে করোনা আক্রান্তদের ওপর এটি প্রয়োগ করছে জাপান। মঙ্গলবার চীনের ঘোষণার পর বুধবার টোকিওতে ফুজিফিল্মের শেয়ারের দাম ১৫ দশমিক চার শতাংশ বেড়েছে। চীনের উহান ও শেনজেন হাসপাতালের দুইশ’ রোগীর ওপর ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানো হয়। ফলাফলে দেখা গেছে, যেসব রোগী ওষুধটি গ্রহণ করেছেন তারা তুলনামূলক কম সময়ের মধ্যে ভাইরাসমুক্ত হয়েছেন। নিউমোনিয়ার মতো লক্ষণগুলোও কমতে দেখা গেছে তাদের মধ্যে।
চীনের জাতীয় বায়োটেকনোলজি উন্নয়ন কেন্দ্রের পরিচালক ঝান জিনমিং বলেন, ফাবিপিরাভির গ্রহণ করা রোগীরা চারদিনের মধ্যে ভাইরাসমুক্ত হয়েছেন। ওষুধটিতে তেমন কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
উহানের আরেকটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে ফাবিপিরাভির নিয়ে চিকিৎসা পাওয়া রোগীরা গড়ে আড়াই দিনের মধ্যে জ্বর থেকে মুক্তি পেয়েছেন। অন্য রোগীদের ক্ষেত্রে তাতে সময় লেগেছে চার দশমিক দুই দিন। এছাড়া চার দশমিক ছয় দিনের মধ্যে কাশির লক্ষণের উন্নতি ঘটেছে ফাবিপিরাভির নেওয়া রোগীদের। অন্য রোগীদের সেখানে সময় লেগেছে আরও এক দশমিক চার দিন বেশি। ফাবিপিরাভির নেওয়া রোগীদের মধ্যে আট দশমিক দুই শতাংশের শ্বাসপ্রশ্বাসে সহায়তার দরকার পড়েছে। যেখানে অন্য রোগীদের মধ্যে ১৭ দশমিক এক শতাংশকে বিভিন্ন যন্ত্রের মাধ্যমে এই সহায়তা দিতে হয়েছে।
ফাবিপিরাভির নিয়ে চীনের এই ইতিবাচক বক্তব্য জাপানের মনোভাবের বিপরীত। ২০১৪ সালে জাপানে যখন ওষুধটির অনুমোদন দেওয়া হয় তখন শর্ত দেওয়া হয় যে, সরকার যদি নতুন বা পুনরুত্থিত কোনও ভাইরাসের মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নেয় তখনই তা ব্যবহার করা যাবে। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, ওষুধটি ভ্রুণের মৃত্যু বা বিকলাঙ্গতার কারণ হতে পারে এবং বীর্যের মধ্য দিয়ে স্থানান্তরিত হতে পারে। ওষুধটি কার্যকারিতা নিয়ে যথেষ্ট পরিমাণ ক্লিনিক্যাল পরিসংখ্যান না পাওয়ায় তা আমদানি না করার সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ কোরিয়ার খাদ্য ও ওষুধ নিরাপত্তা মন্ত্রণলায়। এই সপ্তাহে দেশটির বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ জানায়, সংক্রামক রোগের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।