কনসালটেন্টকে রাখতেই বাড়লো ব্যয়

33

নিজস্ব প্রতিবেদক

মেয়াদ শেষ হওয়ার একবছর আগেই চালু করা হয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প-২। ২০২১ সালের ১৭ মার্চ এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এ প্রকল্প থেকে দৈনিক ১৪ কোটি লিটার পানি পাচ্ছেন নগরবাসী। প্রকল্পটি উৎপাদনে গেলেও কিছু সার্ভিস কানেকশন ও ইন্টার কানেকশনের কাজ বাকি আছে। যার কারণে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে আগামী জুন পর্যন্ত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এনআইজি কনসালটেন্ট কোম্পানি লিমিটেডকে ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ২৪ কোটি ৫২ লাখ ৪ হাজার ৬০১ টাকা দিতে হবে। গত বৃহস্পতিবার ব্যয় বৃদ্ধির এই প্রস্তাব সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দিয়েছে।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন অ্যাজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে ৪ হাজার ৪৯১ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে কর্ণফুলী পানি শোধনাগার প্রকল্প-২ বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। প্রকল্পে জাইকা ২ হাজার ৮০০ কোটি ৯২ লাখ টাকা, বাংলাদেশ সরকার ১ হাজার ৬৬৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা এবং ওয়াসা ২৩ কোটি ৭ লাখ টাকা অর্থায়ন করছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের ৯৮ শতাংশ কাজ শেষ। বাকি রয়েছে শুধু নগরীর মুরাদপুর এলাকায় ইন্টার কানেকশন ও নগরে ৩ হাজার সার্ভিস লাইনের কাজ। এসব কাজ শেষ করতে আগামী জুন পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওয়াসা। শুরুর দিকে এনজেএসের সঙ্গে চট্টগ্রাম ওয়াসার চুক্তিমূল্য ছিলো ২৪৫ কোটি ৯৯ লাখ ৭৮ হাজার ৩৭৪ টাকা। মেয়াদ বাড়ানোর কারণে এ ব্যয় বেড়ে দাঁড়াবে ২৭০ কোটি ৫১ লাখ ৮২ হাজার ৯৭৫ টাকা।
চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প ফেজ-২ এর শোধনাগার নির্মাণসহ মূল কাজ প্রায় একবছর আগে শেষ হয়েছে। ২০২১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।বর্তমানে দৈনিক ১৪ কোটি লিটার করে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে এ প্রকল্প থেকে। কিন্তু প্রকল্পের অধীনে মুরাদপুর এলাকার ইন্টার কানেকশন এবং তিন হাজার সার্ভিস কানেকশনের কাজ এখনো বাকি রয়ে গেছে। তাছাড়া কাজ শেষ হওয়ার পরও কোনো ত্রæটি দেখা দিচ্ছে কিনা সেটা দেখা এবং বিল ছাড়করণসহ কিছু বিষয় জড়িত থাকে। এই সময় পর্যন্ত কনসালটেন্ট প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন থাকায় ভেরিয়েশন বাবাদ সাড়ে ২৪ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছিল। সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এ প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে।
২০১৩ সালের আগস্ট মাসে একনেকে অনুমোদন পাওয়া কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প-২ এর কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের জুন মাসে। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। এই প্রকল্পের আওতায় ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ছাড়াও ৩ দশমিক ৬ কিলোমিটার কনভেন্স পাইপলাইন, ৩১৭ কিলোমিটার ট্রান্সমিশন লাইন, ৭০০ কিলোমিটার ডিস্ট্রিবিউশন পাইপলাইন, দুটি সার্জ ট্যাঙ্ক, ৫৯টি ডিএমএ নির্মাণ, ২ কোটি ৪৮ লাখ লিটার ধারণক্ষমতার জলাধার নির্মাণ এবং ৩০ লাখ লিটার ধারণক্ষমতার একটি সুউচ্চ জলাধার নির্মাণ রয়েছে। বর্তমানে মুরাদপুরের ইন্টার কানেকশন ও তিন হাজার সার্ভিস কানেকশন বাদে বাকি কাজ সম্পন্ন হয়েছে।