এন্টিবায়োটিক অপব্যবহার শরীরের মারাত্মক ক্ষতিকর

28

চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের উদ্যোগে বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ (১৮-২৪ নভেম্বর) ২০২০ উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ২২ নভেম্বর রোববার সকাল ১১টায় নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন লয়েল রোডস্থ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে উপ-পরিচালক ডা. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত হয়। সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিডিসি’র রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স কন্টেইনমেন্ট প্রোগ্রামের সহযোগিতায় এবারের সচেতনতা সপ্তাহের এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে-‘বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহের অঙ্গীকার, এন্টিবায়োটিক ও অন্যান্য জীবানুরোধী ওষুধের সতর্ক ব্যবহার’। আইইডিসিআর’র ওআইও ডা. সাবিজা ইয়াসমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্টিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আন্দরকিল্লা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. অসীম কুমার নাথ (উপ-পরিচালক)। বিশেষ অতিথি ছিলেন ফৌজদারহাট বক্ষ ব্যাধি হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. এস এম নুরুল করিম, চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি ও সিএমপি’র কোতোয়ালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা। বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আবদুর রব। বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. ওমর হায়দার, সাংবাদিক রনজিত কুমার শীল, বিভাগীয় স্বাস্থ্য তত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া, বিভাগীয় কীটতত্ত্ববিদ মোঃ মফিজুল হক শাহ, জেলা পাবলিক হেলথ নার্স ছবি বড়ুয়া, স্বাস্থ্য পরিদর্শক রঞ্জন কুমার মজুমদার, নার্সিং সুপার রোকেয়া বেগম, নার্সিং সুপার জ্যোৎস্না বড়ুয়া, সিনিয়র স্টাফ নার্স বাপ্পী বড়ুয়া, সিনিয়র স্টাফ নার্স জয়প্রিয় বড়ুয়া প্রমূখ। সভায় স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্নস্তরে কর্মরত কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আন্দরকিল্লা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও উপ-পরিচালক ডা. অসীম কুমার নাথ বলেন, সব রোগে এন্টিবায়োটিক প্রয়োজন হয়না আবার বিনা প্রয়োজনে কোন ধরণের এন্টিবায়োটিক খাওয়া যাবে না। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক সংক্রমণে সঠিক এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হবে। এন্টিবায়োটিকের কোর্স নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন না করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকেনা। এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার শরীরের জন্য এত মারাত্বক ক্ষতিকর যে এটি করোনাভাইরাস থেকেও ভয়াবহ। জ্বর বা জঠিল রোগ হলে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের শরনাপন্ন হয়ে পরামর্শ মতে এন্টিবায়োটিক ও অন্যান্য ওষুধ সেবন করতে হবে। এন্টিবায়োটিকের কোর্স নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন না করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকেনা। তিনি আরো বলেন, সব ওষুধের পার্শ¦ প্রতিক্রিয়া থাকে। শুধু অসুস্থ মানুষ নয়, গবাদি পশু, হাঁস-মুরগী ও মাছের ক্ষেত্রেও নিজে নিজে এন্টিমাইক্রেবিয়াল ওষুধ দেয়া যাবেনা। এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হলে শরীরের ব্যাকটেরিয়াগুলো মারা যায়। ফলে আর কোন এন্টিবায়োটিক শরীরের জন্য কার্যকর হয়না। এ ব্যাপারে ডাক্তার ও রোগী সাধারণসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেতন থাকতে হবে।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, এন্টিবায়োটিক শরীরের জন্য খুবই প্রযোজন। কোন্ রোগের জন্য কোন্ ওষুধ তা নিশ্চিত না হয়ে ওষুধ প্রেসক্রাইব না করতে চিকিৎসকদের আন্তরিক থাকতে হবে। রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে এন্টিবায়োটিক দেয়া যাবে কি না তা চিকিৎসককে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং এন্টিবায়োটিকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা বাঞ্চনীয়। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া সকল প্রকার ওষুধ বিক্রয় থেকে বিরত থাকতে ফার্মেসী মালিকদেরকেও আন্তরিক থাকতে হবে। এন্টিবায়োটিকের উপকারিতা-অপকারিতা সম্পর্কে স্কুলের শিক্ষার্থীদেরকে সচেতন করা গেলে মানুষ এর অপব্যবহার থেকে বিরত থাকবে।