আরেক দফা বাড়লো মুরগির দাম, বাড়তি সবজিও

29

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে আরও এক দফায় বাড়ল ব্রয়লার মুরগির দাম। গত সপ্তাহে ১৭০ টাকা বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও ১৯০ টাকা দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। অন্যদিকে শীতকালীন কিছু সবজির দাম কমলেও বাড়তি রয়েছে অন্যান্য সবজির দাম। তবে মাছ-মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল শুক্রবার নগরীর রিয়াজ উদ্দিন বাজার, মোমিন রোড, বহদ্দারহাটসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দামবৃদ্ধির বিষয় জানা যায়।
সবজি বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে শীতকালীন সবজি প্রায়ই চলে এসেছে। সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গাজর। মানভেদে এক কেজি গাজর ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা দরে। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। ছোট ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৬০ টাকায়। চাল কুমড়া ও মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, মূলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। এছাড়া কাকরোল বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে, বরবটির কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, পেঁপে কেজি ২০ টাকা। এছাড়া কাঁচকলার হালি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, লাল শাকের আঁটি ১০ থেকে ২০ টাকা, মূলা শাকের আঁটি ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমি শাকের আঁটি ৫ থেকে ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আলুর কেজি ১৮ থেকে ২২ টাকার মধ্যে। লেবুর হালি ২০ টাকা, মাঝারি সাইজের লাউ ৩০ টাকা।
মাছের বাজার ঘুরে জানা যায়, মাছের দামে তেমন কোন হেরফের দেখা যায়নি। নদীর চিংড়ি আকারভেদে কেজি ৭০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। সামুদ্রিক লাল চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। এছাড়া ট্যাংরা মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। রুই (দেড় কেজি ওজনের) ৩০০ টাকা, আইর মাছ ৬০০ টাকা, বোয়াল ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া ১৪০ টাকা কেজি, নদীর সরপুঁটি ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুরগির বাজারে গিয়ে জানা যায়, টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে বাড়তে থাকা ব্রয়লার ও পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দাম আরও এক দফায় বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগির দাম ও আর সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত। সে অনুযায়ী ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৮০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। আর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে। সে হিসাবে মাসের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৭০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। প্রতিকেজি গরুর মাংস হাঁড়সহ বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৬৮০ টাকা এবং হাঁড় ছাড়া বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা। একইসাথে খাসির মাংস ৮৫০ থেকে সাড়ে ৯শ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি ডজন লেয়ার মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০৮ থেকে ১১০ টাকায়। দেশি মুরগির ডিম ডজন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা এবং হাঁসের ডিম ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রিয়াজুদ্দিন বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী মো. শফি বলেন, ব্রয়লার মুরগির মত পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দামও কয়েক দফায় বেড়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে ২১০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সোনালি মুরগির দাম বেড়ে এখন ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে এই মুরগির কেজি বিক্রি হয় ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা।
দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি পূর্বদেশকে বলেন, একদিকে বাজারে মুরগি সরবরাহ কমেছে, অন্যদিকে হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। এখন বিয়েসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। ফলে মুরগির চাহিদা বাড়াতে দামও বেড়ে গেছে।
রিয়াজুদ্দিন বাজারে কেনাকাটা করতে আসা রহিমা আক্তার বলেন, সবকিছুর দামে যেন আগুন লেগেছে। কোন সবজি ৫০ টাকার নিচে নেই। ৫০০ টাকার বাজার করলেও চোখে লাগছে না। এ অবস্থায় আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম জেলা বাজার কর্মকর্তা সেলিম মিয়া দৈনিক পূর্বদেশকে বলেন, কয়েকটি পণ্য ছাড়া বাকিগুলো স্বাভাবিক রয়েছে। সরকারের আমদানি ও সরবরাহের উপর দাম উঠানামা করে। তাই অনেক সময় ১০-২০ টাকা এদিক ওদিক হয়। এরপরও আমরা বাজার মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি, কারও কোন অভিযোগ থাকলে সরাসরি আমাদেরকে জানাতে পারবেন।