আজ মহাষ্টমী ও কুমারী পূজা

7

নিজস্ব প্রতিবেদক

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার গতকাল রবিবার মহাসপ্তমী সাড়ম্বরে উদযাপিত হয়েছে। বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ সারাদেশে হিন্দু-ধর্মাবলম্বীরা পূজামন্ডপগুলোতে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় পূজা-অর্চনার মাধ্যমে মহাসপ্তমী উদযাপন করেছেন। পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয়ার আনুষ্ঠানিকতার আজ মহাষ্টমী ও কুমারী পূজার আয়োজন রয়েছে।
সপ্তমীর সকালে ভক্ত-পূজার্থীরা পূজামন্ডপগুলোতে দলে দলে ভিড় জমান। পূজার শুরুতেই দেবী দুর্গার প্রতিবিম্ব আয়নায় ফেলে বিশেষ ধর্মীয় রীতিতে স্নান করানো হয়। এরপর করা হয় নবপত্রিকা স্থাপন। নবপত্রিকার আরেক নাম হলো কলা-বৌ স্নান। এছাড়া চক্ষুদানের মাধ্যমে দেবী দুর্গার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। পূজা শেষে হাতের মুঠোয় ফুল-বেলপাতা নিয়ে ভক্তরা মন্ত্র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে এবারের পূজার প্রথম অঞ্জলি দেন মহামায়া দেবী দুর্গার শ্রীচরণে। করজোড়ে কাতর কণ্ঠে জগজ্জননীর কাছে শান্তিময় বিশে^র প্রার্থনা করেন ভক্তরা। ঢাকের বাদ্য, কাঁসর-ঘণ্টা ও শঙ্খধ্বনিতে দেবীর আরাধনার পাশাপাশি সব কর্মসূচিতেই ছিল একই আর্তি।
এর আগে গত পয়লা অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয় পাঁচ দিনব্যাপী সার্বজনীন শারদীয় দুর্গোৎসব। ‘বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত’ পঞ্জিকানুযায়ী, আজ সোমবার মহাষ্টমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল নয়টা ৩০ মিনিটে এবং বেলা ১১টায় হবে কুমারী পূজা। নগরীর পাথরঘাটা শান্তনেশ্বরী মন্দিরসহ কয়েকটি মন্ডপে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও কুমারী পূজার আয়োজন রয়েছে। সন্ধিপূজা শুরু হবে বিকেল চারটা ৪৪ মিনিটে এবং সম্পন্ন হবে বিকেল পাঁচটা ৩২ মিনিটের মধ্যে।
হিন্দু ধর্মীয় শাস্ত্রমতে, তিন অবতারের আবির্ভাবকাল ত্রেতাযুগে যুগাবতার রামচন্দ্র তার স্ত্রী সীতাকে উদ্ধার করতে দেবী দুর্গার অকালবোধন করেন। ব্রহ্মার নির্দেশ অনুযায়ী দুর্গার সাহায্যে লঙ্কার শিরোমণি রাবণকে বধ করে সীতাকে উদ্ধার করেন তিনি। দেবীর সেই আগমনের সময়ই দুর্গোৎসব। আর রামচন্দ্র শরৎকালে দেবীকে আবাহন করেছিলেন বলে এটা শারদীয় দুর্গাপূজা নামেও পরিচিত। আর মর্ত্যলোকে আসতে পঞ্চমীতে দেবীর সেই ঘুম ভাঙানোকে বলা হয় অকালবোধন। আগামী বুধবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা নিরঞ্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের দুর্গোৎসবের। একটি বছরের জন্য ‘দুর্গতিনাশিনী’ দেবী ফিরে যাবেন কৈলাসের দেবালয়ে। দেবী দুর্গার এবার মর্ত্যলোকে আগমন হয়েছে গজে অর্থাৎ হাতিতে চড়ে। এর ফল শস্যপূর্ণ বসুন্ধরা। আর গমন করবেন নৌকায় চেপে। যার ফলশ্রুতিতে শস্য ও জল বৃদ্ধির যোগ রয়েছে বলে মনে করা হয়।