‘অনেক হিট চলচ্চিত্রে নারী বিদ্বেষ প্রকাশ পাচ্ছে’

6

দেশে নারীকেন্দ্রিক গল্প হলেও সেটা আসলে নারী কতটা প্রধান তা প্রশ্নের বিষয়- কেননা সে গল্প দেখানো হয় পুরুষের দৃষ্টিতে। কিন্তু প্রকৃত নারীকেন্দ্রিক চরিত্র তৈরি করতে হলে চরিত্রটিকে দেখতে হবে নারীর চরিত্রে। কেননা পুরুষের দৃষ্টিতে সেটা প্রধান চরিত্র হলেও নারীর অনেক সু²তম বিষয় মার খেয়ে যায়। ফলে নারীকেন্দ্রিক বলা হলেও সেটা আসলে প্রকৃত অর্থে নারীকেন্দ্রিক চরিত্রে হয়ে ওঠে না।, এমনটাই মনে করেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। শুধু তাই নয়, দেশীয় অনেক সিনেমা হিট হচ্ছে সেসবে নারীবিদ্বেষ প্রকাশ পাচ্ছে বলে অভিনেত্রী নিজের পর্যবেক্ষণ জানান।
গণমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে আলোচিত এই অভিনেত্রী বলেন, আমাদের এখানে নারীকেন্দ্রিক গল্প হলেও সেটা হচ্ছে পুরুষের দৃষ্টিতে নারীকে দেখার গল্প। নারীর দৃষ্টিতে নারীকেও দেখা খুব কঠিন। কারণ নারীর দৃষ্টিতে সমাজটা যে মাত্রার কদর্যতা নিয়ে ধরা দেয়, সেটা দেখতে আর বলতে গেলে ‘কুৎসিত’ শব্দটিই মনে আসছে। সেই কুৎসিত সমাজটা মানুষ দেখতে চায় কি না সেটাও ভাবার বিষয়। আমার দৃষ্টিতে আমার বাবার চরিত্রটা কেমন, আমার ভাইয়ের চরিত্রটা কেমন, আমার সঙ্গীর চরিত্রটা কেমন সেটা কিন্তু আমরা দেখতে পাই না। আমরা যা দেখতে পাই সেটা প্রচলিত সমাজব্যবস্থায় সৃষ্ট পুরুষ চোখে দেখা দৃশ্য ও তার চিন্তা।
অনেক হিট সিনেমায় নারীবিদ্বেষ প্রকাশ পাচ্ছে। তিনি বলেন, এই যুগে আমরা নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কথা বলছি, কিন্তু আদৌ সেটাকে কতটা বিশ্বাস করে চর্চা করছি এসব জায়গা প্রশ্নবিদ্ধই থেকে যাচ্ছে। ইদানীং এমন কিছু সিনেমা সুপারহিট হচ্ছে, সেসব সিনেমায় নারীবিদ্বেষী মনোভাব প্রকাশ পাচ্ছে। এসব সিনেমায় নারীকে কেবল বস্তু এবং খারাপ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এমন কাজই মানুষ গ্রহণ করছে।
খুপিয়া খ্যাত অভিনেত্রী বাঁধন বলেন, আমি মনে করি, এখানে দর্শকেরও একটা বড় ভূমিকা আছে। ইতিবাচক পরিবর্তনে আমাদের সঙ্গে তাদেরও একাত্ম হওয়ার দরকার। বিনোদন তো বিনোদনই। কিন্তু এই বিনোদনের মধ্যে যেন আমরা আমাদের বিবেচনাকে কাজে লাগাতে পারি, সেটাও যেন মাথায় থাকে। দর্শকদের চিন্তা-ভাবনার পরিবর্তনেরও জায়গা রয়েছে। তারা যখন বাইরের কাজ দেখছেন তখন এক ধরনের মনমানসিকতা পোষণ করছেন, যখন আমাদের কাজ দেখছেন তখন আরেক ধরনের মনমানসিকতা পোষণ করছেন এটা কেন!