হালদার কাতলা মাছটি বাঁচানো গেল না

25

দেশের একমাত্র জোয়ার-ভাটার মিঠা পানির কার্প-জাতীয় (রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ) মা-মাছের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর ১৪ কেজি ওজনের ডিমওয়ালা আহত কাতলাটিকে (মা-মাছ) কৃত্রিম অক্সিজেন দিয়েও বাঁচিয়ে রাখা গেল না। গতকাল সোমবার সকালে এ কাতলা মাছটি মারা যায়।
শনিবার (৯ মে) সকালে উদ্ধার করার পর মাছটিকে বাঁচাতে হালদার মা মাছের সুরক্ষা নিশ্চিত কাজে নিয়োজিত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (আইডিএফ) এর হাটহাজারী গড়দুয়ারার নয়াহাট প্রকল্প অফিসে হস্তান্তর করা হয়। মাছটিকে বাঁচাতে কৃত্রিম অক্সিজেনে প্রাণপণ লড়াই চালায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ সেন্টারও।
আহত অবস্থায় মাছটি উদ্ধারের পর চিকিৎসা দিয়ে বাঁচানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়েছে এমনটা দাবি করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক হালদা গবেষক ড. মনজুরুল কিবরিয়া জানান, একটি ট্যাংকে পানি নিয়ে তাতে দুর্বল মাছটিকে রেখে পটাশিয়াম পার ম্যাঙ্গানেট, অক্সিডাইজিং কেমিক্যালের প্রয়োগে অক্সিজেন দেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে মাছটি কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেলেও আঘাতের পরিমাণ গুরুতর হওয়ায় মৃত্যুকে জয় করতে পারেনি। পরে মাছটি মারা যায়।
তবে আহত কাতলা মাছটিকে সুস্থ করে তুলতে চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সহ অনেকে চেষ্টা করেছেন।
এদিকে মাছটি মিউজিয়ামে সংরক্ষণের জন্য চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) হস্তান্তর করা হবে জানিয়ে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএসও) রুহুল আমিন জানান, কাতলা মা-মাছটির পেটে ছিল প্রচুর ডিম। কিছু দিনের মধ্যে হালদা নদীতে মাছটি ডিম ছাড়ত। মাছটির পেটের অংশে ছিল গুরুতর আঘাতের চিহ্ন। হয়ত কোনো ব্লক পার হতে গিয়ে পেটের দু’পাশে আঘাত পেয়েছে। পেটে প্রচুর ডিমের পাশাপাশি আঘাতে মাছটি দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তাই মাছটিকে অনেক চেষ্টা করেও বাঁচানো গেল না।
গত শনিবার হালদা নদীর সর্তার ঘাট এলাকা থেকে ১৪ কেজি ওজনের একটি আহত কাতলা (মা-মাছ) মাছ উদ্ধার করে ইউএনও রুহুল আমিন। পরে আহত মাছটিকে বাঁচাতে দ্রুত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আইডিএফ এর কাছে হস্তান্তর করা হয়।