সড়ক পরিবহন আইন বাতিলের দাবি

38

সড়ক পরিবহন আইন বাতিলপূর্বক জনবান্ধব সড়ক পরিবহন আইন প্রণয়ণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক পূর্বাঞ্চল বিভাগ। গতকাল সোমবার নগরীর অলংকার মোড়ে শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করেন তারা। এ সমাবেশে প্রায় তিন হাজার চালক-শ্রমিক অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, নতুন যে আইন করা হয়েছে তা চালকদের কথা বিবেচনা করে করা হয়নি। আইনপ্রণয়নকারীরা তাদের মনগড়াভাবে এটা করেছেন। এটা আমরা কখনো মেনে নিতে পারি না। চালকরা যদি চাবি নিয়ে ঘরে বসে থাকেন তাহলে সড়কে কোন গাড়ি চলাচল করবে না, আইন ভঙ্গ করারও কেউ থাকবেন না। তারা তাদের আইন নিয়ে পড়ে থাকবে। আর জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হবে। আমরা চাই না জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হউক। সুতরাং শ্রমিক ও জনবান্ধব আইন তৈরি করা হউক।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিদ্দিকুল ইসলাম বলেন, সরকারের সড়ক পরিবহনের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং অধিদফতর দুর্নীতির আখড়া। সেখানে আগে দুর্নীতি মুক্ত করতে হবে, তবেই আইন প্রয়োগ করা যাবে। এখানে আমরা দেখছি একটি লাইসেন্স করতে গেলেই ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা দালালি খরচ দিতে হচ্ছে, অথচ কোন চালক যদি সরাসরি কার্যালয়ে যান তবে কর্মকর্তারা বিভিন্ন অজুহাত দেখান। আবার নতুন আইনে গাড়ির লাইসেন্স নেওয়ার ক্ষেত্রে দেখছি ৮ম শ্রেণি পাস বাধ্যতামূলক করছে। তাহলে চালকরা তো ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত কেউ পড়েননি, তাহলে ৮ম শ্রেণি পাসের সনদ দিবে কোথা থেকে? তারা কি গাড়ি না চালিয়ে বসে থাকবে? আবার লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে দন্ডিত হতে হবে, এটা কেমন কথা।
বাংলাদেশ জাতীয় সড়ক পরিবহন আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশকে রাতারাতি দুবাই বা লন্ডন বানানো যাবে না। সামগ্রিকভাবে দেশকে উন্নত করলে পরিবহন সেক্টরও উন্নত হবে। দেশে ১০টা সমস্যা সৃষ্টি করে একটি সমস্যার সমাধান করা যায় না। রাস্তা কাটাকাটি বন্ধ করে চলাচলের উপযোগী করতে হবে, নতুন নতুন গাড়ি আমদানির সুযোগ এবং রাস্তায় নামাতে হবে।
সাগরিকা পিকআপ চালক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সরকারের এ কালো আইন আমরা মেনে নিতে পারবো না। প্রয়োজনে লাগাতার কর্মসূচি দিতে হবে, এ আইনটি বাতিল করে চালকদের শ্রমিক ও জনবান্ধব করে নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে। কারণ সরকারের এটাও ভাবতে হবে আমরাও মানুষ। আমাদেরও বউ বাচ্চা সংসার আছে। আমরা চাইনা সড়ক দুর্ঘটনায় কারও প্রাণ চলে যাক। আর রাস্তারও অনেক দোষ আছে, যেমন রাস্তা ভাঙা, অনেক পুরনো গাড়ি চলাচল, মহাসড়কে সিএনজি ট্যাক্সি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্তে¡ও চলাচল ইত্যাদি।
এসময় হালকা ও ভারি পরিবহন বাস, ট্রাক, লরি, ট্রেইলার, পিকআপ, কার, মাইক্রো, সিএনজি ট্যাক্সিসহ সকল গাড়ির পেশাদার চালক শ্রমিক সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।