সীমিত পর্যায়ে হচ্ছে ‘কমিউনিটি সংক্রমণ’

108

দেশে নতুন করে আরও ৯ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর সীমিত পর্যায়ে কমিউনিটি সংক্রমণ হচ্ছে বলে স্বীকার করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গতকাল শনিবার (৪ এপ্রিল) কোভিড-১৯ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। এসময় নতুন করে আক্রান্তদের সবাইকে ‘সোর্স অব ইনফেকশন’ অভিহিত করেন তিনি। এসময় পরীক্ষার সংখ্যা বেশি নয় জানিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করার কথা জানান তিনি। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
তিনি বলেন, আমরা সকলের কন্টাক্ট ট্রেসিং করতে পেরেছি। যখনই কোনও টেস্ট পজিটিভ হয়, সঙ্গে সঙ্গে তার কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের কাজ শুরু করি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক জানান, নতুন করে শনাক্ত হওয়া ৯ জনসহ দেশে করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এখন পর্যন্ত মোট ৭০ জন। এই ৭০ জনের সংস্পর্শে কারা কারা এসেছিলেন (কন্টাক্ট ট্রেসিং) তাদের খুঁজে বের করা হয়েছে।
তাহলে কি কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, যারা বিদেশ থেকে এসেছেন, প্রথমে তাদের মাধ্যমে তাদের পরিবারে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। সেসব সদস্যের সঙ্গে যারা ওঠা-বসা করেন তাদের মধ্যেও সংক্রমণ ছড়িয়েছে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, যেমন মিরপুরের ঘটনা। সেখানে তারা নামাজ পড়তেন একসঙ্গে, এলাকার ভেতরে তারা একসঙ্গে হাঁটাহাঁটি করতেন। এরা কিন্তু তাদের পরিবারের সদস্য ছিলেন না। তবে এটা ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ, এটাকে কমিউনিটি সংক্রমণ বলাই যায়।
তিনি স্বীকার করেন, এখন পর্যন্ত পরীক্ষার সংখ্যা অনেক বেশি নয়। এটা এখনও সীমিত পর্যায়। তবে অবশ্যই কমিউনিটি সংক্রমণ আমরা বলতে পারি। তাই পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়িয়ে দেওয়া হবে। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হওয়া উচিত, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, একান্ত প্রয়োজন না হলে ঘরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছি সবাইকে। সরকার থেকে যত ব্যবস্থাই নেওয়া হোক না কেন, মানুষ যদি নিজে তার সঠিক ভূমিকা পালন না করে তাহলে কিন্তু করোনার এই সংকট থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া সহজ নয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৫৫৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৩৪টি। নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৯ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭০ জন। আর মারা গেছেন ২ জন, মোট মারা গেছেন ৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর আরও জানায়, নতুন আক্রান্ত হওয়া ৯ জনের মধ্যে ৫ জনের কন্টাক্ট ইতিহাস রয়েছে। অর্থাৎ যারা ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের সংস্পর্শে এসেছেন তাদেরই পরিবারের সদস্য এই পাঁচ জন। এছাড়া বিদেশ ফেরতদের সংস্পর্শে এসেছেন এমন দুইজন রয়েছেন। বাকি দুইজনের ক্ষেত্রে এখনও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
৯ জনের মধ্যে দু’জন শিশু, যাদের বয়স ১০ বছরের নিচে। তিনজনের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। দু’জনের বয়স ৫০ থেকে ৬০-এর মধ্যে। একজনের বয়স ৬০ থেকে ৭০ এর মধ্যে এবং আরেকজনের বয়স ৯০ বছর।