সিএমপি’র ১০৪ সিসি ক্যামেরার ৭৯টি বিকল

21

নগরীর তিন চতুর্থাংশ সিসি ক্যামেরাই বিকল। এর সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা। জানা যায়, জঙ্গি হামলা ও অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ ২০১৪ সালে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও স্থানগুলোতে ১০৪টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে। যেগুলো দিয়ে লোকজন ও যানবাহনের চলাচল ধারণ করা হয়। কিন্তু ১০৪টি সিসি ক্যামেরার মধ্যে বর্তমানে সচল আছে মাত্র ২৫টি। বাকি ৭৯টি বিকল অবস্থায় পড়ে আছে। এগুলো সচল করারও কোন উদ্যোগও নেই।
সিএমপি সূত্রে জানা গেছে, নগরীতে ৪০টির মত ছোট বড় মোড় রয়েছে। এসব মোড়ের মধ্যে ২৮টিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসিবে চিহ্নিত করা হয়। এ ২৮টি মোড়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা মোড় ও স্থানগুলো হচ্ছে নিউ মার্কেট মোড়ে ৪টি, জিইসি মোড়ে ৪টি, মুরাদপুর মোড়ে ৪টি, আকবরশাহ মোড়ে ৩টি, বহদ্দারহাট মোড়ে ৪টি, চকবাজার মোড়ে ৪টি, দেওয়ানহাট মোড়ে ৪টি, ইস্পাহানি মোড়ে ৪টি, অলংকার মোড়ে ৪টি, বাদামতলী মোড়ে ৪টি, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন এলাকায় ৮টি, নিমতলী বিশ্বরোড মোড়ে ৩টি, টেরিবাজার মোড়ে ৪টি, ২ নম্বর গেট মোড়ে ৪টি, নাসিরাবাদ হাউজিংয়ে ২টি, অক্সিজেন মোড় চেকপোস্টে ৩টি, সিটি গেট চেকপোস্টে ৩টি, মইজ্জারটেক চেকপোস্টে ৩টি, কোর্ট বিল্ডিংয়ে ৬টি, ওয়াসা মোড়ে ৩টি, আলমাস মোড়ে ৩টি, কাজীর দেউড়ি মোড়ে ৪টি, নেভাল এভিনিউ মোড়ে ৪টি, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় মোড়ে ৩টি, শাহ আমানত মার্কেট মোড়ে ৩টি, দিদার মার্কেট মোড়ে ৩টি, কেয়ারি ইলিশিয়াম মোড়ে ৩টি, মির্জারপুল মোড়ে ৩টি। এসব মোড় ও স্থানের বেশিরভাগ সিসি ক্যামেরাই বিকল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। মাত্র ২৫টি ক্যামেরা সচল আছে। সচল থাকা ক্যামেরার মধ্যে রয়েছে ওয়াসা মোড়ে ৩টি, নেভাল এভিনিউ মোড়ে ৪টি, শাহ আমানত মার্কেট মোড়ে ৩টি, দিদার মার্কেট মোড়ে ৩টি, কেয়ারি ইলিশিয়াম মোড়ে ৩টি, মির্জারপুল মোড়ে ৩টি ও আদালত ভবনে ৬টি।
জানা গেছে, গত একবছর ধরেই সিসি ক্যামেরাগুলো বিকল অবস্থায় রয়েছে। দু’একটা সচল করলেও ফের বিকল হয়ে যায় আরও কয়েকটি। গত শুক্রবার রাতে ষোলশহর দুই নম্বর গেটে ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বিস্ফোরণে দুই পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজন আহত হন। ঘটনার আগে বিস্ফোরকটি বক্সের ভেতর কে বা কারা রেখে যায়। ছুটির দিন হওয়ায় বন্ধ ছিল আশপাশের দোকান। লোকসমাগম ছিলও কম। এ বক্সের আশপাশে থাকা সিসি ক্যামেরা দীর্ঘদিন ধরে বিকল রয়েছে। এ কারণে কারা পুলিশ বক্সে বোমা রেখে যায় বা কিভাবে বিস্ফারণ ঘটে তা সনাক্ত করা যাচ্ছে না।
সিএমপি’র কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপপুলিশ কমিশনার হাসান মো. শওকত আলী বলেন, সিসি ক্যামেরা না থাকায় অপরাধী সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রকৃত ঘটনাও জানতে বিলম্ব হচ্ছে। সিসি ক্যামেরা থাকলে অনেকটা সহজ হত।
জানা গেছে, সিসি ক্যামেরা না থাকায় অপরাধীরা অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে। ক্যামেরা চালু থাকলে অপরাধী সনাক্তে খুব বেশি বেগ পেতে হত না। ২০১৬ সালের ৫ জুন জিইসি মোড় এলাকায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম হত্যায় জড়িত আসামিদের শনাক্ত করা হয় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে। আসামিরা কেউ হেঁটে আর কেউ মোটর সাইকেলে করে পালিয়ে যায়। সিসি ক্যামেরা থাকায় সহজে তা ধরা পড়ে। এভাবে খুন, ছিনতাইসহ একাধিক ঘটনায় অপরাধী শনাক্তকরণ কাজে লাগে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। কিন্তু ক্যামেরা অচল থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।
সিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) শ্যামল কুমার নাথ জানান, অচল থাকা সিসি ক্যামেরাগুলো সচল করার পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। দ্রূততম সময়ে কাজ করা হবে। তিনি বলেন, অপরাধী সনাক্তে সিসি ক্যামেরার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।