সাংবাদিকদের সঙ্গে শমী কায়সারের দুর্ব্যবহারে নিন্দা

44

জাতীয় প্রেস ক্লাবে গত বুধবার একটি অনুষ্ঠান চলার সময় মোবাইল ফোন হারিয়ে ফেলে অভিনেত্রী ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার অনুষ্ঠানটির সংবাদ সংগ্রহ করতে আসা সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ ওঠায় এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। গতকাল বৃহস্পতিবার সংগঠনটির পক্ষে এ বিষয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানানোর পাশাপাশি শমী কায়সারকে সাংবাদিকদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। না হলে ভবিষ্যতে তার সংবাদ বর্জনের ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।-খবর বাংলা ট্রিবিউনের
বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব শাবান মাহমুদ, ডিইউজে সভাপতি আবু জাফর সূর্য ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরীর দেওয়া ওই যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘একজন শহীদ সাংবাদিকের মেয়ে হয়ে পিতার পেশার উত্তরসূরীদের ‘চোর’ বলে সম্বোধন করে শমী কায়সার প্রকারান্তরে তার পিতাকেই নিকৃষ্টভাবে অসম্মান করেছেন। শুধু তাই নয়, একজন সেলিব্রিটি হিসেবে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘মোবাইল ফোন হারানোর’ সূত্র ধরে যে আচরণ করেছেন তা সেলিব্রিটিদের প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তার মতো একজন অভিনেত্রী ও ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ অত্যন্ত গর্হিত ও নিন্দনীয়।
ডিউইজে যুগ্ম সম্পাদক আকতার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বিএফইউজে ও জিইউজে নেতারা এ ধরনের নিকৃষ্টতম দুর্ব্যবহারের জন্য সাংবাদিক সমাজের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, নতুবা যত বড় সেলিব্রিটিই হোন না কেন তার সংবাদ বর্জন করা হবে। প্রয়োজন হলে তার সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ-খবর নিয়ে সাংবাদিক সমাজ নিয়মিত সংবাদ পরিবেশন করে জাতিকে বিস্তারিত জানাতে বাধ্য হবে।
এদিকে, একই ঘটনায় ফেসবুকে নিজের পেজে এই ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিনও। ওই স্ট্যাটাসে প্রেসক্লাবে ঘটনাটি ঘটলেও প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে শমী কায়সারের এমন মন্তব্য এবং সাংবাদিকদের দেহ তল্লাশির ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন তিনি।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘জাতীয় প্রেস ক্লাবে গতকাল বুধবার একটি অনুষ্ঠান চলার সময় বিশিষ্ট অভিনেত্রী শমী কায়সারের ফোন সেট হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে একটি অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এটি দুঃখজনক। প্রেস ক্লাবে ঘটনাটি ঘটলেও ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পারি। এটাও জানতে পারি অনুষ্ঠানে কেক দিতে আসা লোকেরা ফোন নিয়ে যায়। অথচ শমীর লোকেরা সাংবাদিকদের দেহ তল্লাশি করেছে। বিষয়টি সাংবদিকদের সম্মানও মর্যাদার সঙ্গে জড়িত। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই।’
উল্লেখ্য, বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠান চলাকালে সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট ও অভিনেত্রী শমী কায়সার হঠাৎ লক্ষ্য করেন তার দুটো ফোন সেটই খোয়া গেছে। এর পরপরই অনুষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করে প্রেসক্লাবের হলকক্ষ বন্ধ করে উপস্থিত সাংবাদিকসহ সবার দেহ তল্লাশির নির্দেশ দেন তিনি। এসময় যাদের দেহ তল্লাশি হয়েছে তাদের কেউ কেউ পেশাগত কাজে বের হতে চাইলে তার উদ্দেশে ‘চোর’ বলে ওঠেন তিনি। পরে অনুষ্ঠানে থাকা ক্যামেরা পারসনদের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, অনুষ্ঠানে কেক দিতে আসা লোকদের কেউ একজন তার ফোন নিয়ে চলে গেছে। ঘটনাস্থলে শমী ‘স্যরি’ বললেও এরপর থেকেই সাংবাদিকদের মুখে মুখে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শমী কায়সারের আচরণ নিয়ে নানা ধরনের শ্লেষাত্মক বক্তব্য উঠে আসছে।