সরদার জয়েনউদ্দীন (১৯১৮-১৯৮৬)

76

সরদার জয়েনউদ্দীন, কথাসাহিত্যিক। পাবনা জেলার কামারহাটি গ্রামের এক কৃষক পরিবারে তাঁর জন্ম। প্রকৃত নাম মুহম্মদ জয়েনউদ্দীন বিশ্বাস। খলিলপুর হাইস্কুল থেকে ১৯৩৯ সালে ম্যাট্রিক পাস করে তিনি পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ-এ আইএ পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। ১৯৪১ সালে সেনাবাহিনীর কেরানিপদে যোগদানের মাধ্যমে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। পরে দৈনিক পাকিস্তান, সংবাদ, ইত্তেফাক ও অবজার্ভার পত্রিকা এবং বাংলা একাডেমী, ন্যাশনাল বুক সেন্টার (বর্তমানে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র), বাংলাদেশ টেক্সট বুক বোর্ড প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে ১৯৮০ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। মাঝে কিছুদিন তিনি (১৯৫৫-৫৬) পাকিস্তান কোঅপারেটিভ বুক সোসাইটির শিশুকিশোর ম্যাগাজিন সেতারা ও শাহীনের সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন।
সরদার জয়েনউদ্দীন ছিলেন একজন জনপ্রিয় কথাশিল্পী। তাঁর প্রথম গল্পগ্রন্থ নয়ান ঢুলি প্রকাশিত হয় ১৯৫২ সালে এবং এর মাধ্যমেই তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। তাঁর অন্যান্য গল্পগ্রন্থ হচ্ছে বীর কণ্ঠীর বিয়ে (১৯৫৫), খরগ্রোত (১৯৫৫), বেলা ব্যানার্জীর প্রেম (১৯৬৮) ও অষ্টপ্রহর (১৯৭৩)। উপন্যাসের মধ্যে নীল রং রক্ত (১৯৫৬), পান্নামতি (১৯৬৪), আদিগন্ত (১৯৬৫), অনেক সূর্যের আশা (১৯৬৬), বেগম শেফালী মির্জা (১৯৬৮) ও বিধ্বস্ত রোদের ঢেউ (১৯৭৫) প্রধান। তিনি উল্টো রাজার দেশ ও অবাক অভিযান নামে দুটি শিশুতোষ গ্রন্থও রচনা করেন।
জয়েনউদ্দীনের রচনায় গণমানুষের কল্যাণ ও মুক্তিচিন্তার পাশাপাশি সমকালীন সমাজ ও রাজনীতিবিষয়ক ঘটনাবলিও প্রাধান্য পেয়েছে। অনেক সূর্যের আশা উপন্যাস তাঁকে খ্যাতি ও প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬৭) এবং কথাসাহিত্যে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৭) লাভ করেন। ১৯৮৬ সালের ২২ ডিসেম্বর ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়। সূত্র : বাংলাপিডিয়া