সকালে ধর্মঘটের ডাক দুপুরে প্রত্যাহার

52

শ্রমিক নেতাকে মারধরের বিচারসহ কয়েকটি দাবিতে বৃহত্তর চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় তা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। রবিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে শ্রমিকদের একটি অংশ ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিলেও দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন জানান, ভুল বোঝাবুঝির কারণে শ্রমিকদের একটি অংশ বৃহত্তর চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট আহব্বান করে। এর পরপরেই আমরা তাদের সঙ্গে বসেছি। কথা বলেছি। দুই পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে তাদের মধ্যে মিমাংসা করে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। খবর বাংলানিউজের
এর আগে রবিবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে শ্রমিক নেতাকে মারধরের বিচার দাবিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় আজ ভোর ছয়টা থেকে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।
সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশনের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সভাপতি মোহাম্মদ মুছা অভিযোগ করে বলেন, গত ১০ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টায় সীতাকুন্ডের সংসদ সদস্য দিদারুল আলম ফেডারেশনের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অলি আহামদ ও জেলা হিউম্যান হলার মালিক সমিতির (৮ নম্বর রুট) নেতাদের বাসায় ডেকে নিয়ে যান। অলি আহামদকে ৮ নম্বর রুটের গাড়ি পরিচালনা ও সমিতির নিয়ন্ত্রণ লিখিতভাবে ছেড়ে দিতে বলেন সংসদ সদস্য। তখন অলি আহামদ শ্রমিকদের মতামত ছাড়া এটা দেওয়া যায় না বলে জানান। একপর্যায়ে সংসদ সদস্য হিউম্যান হলার মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক খোরশেদ আলমকে মারধর করেন।
মুছার সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেক পর একই জায়গায় পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে বৃহত্তর চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। পরিষদের সদস্যসচিব উজ্জ্বল বিশ্বাস ধর্মঘট প্রত্যাখ্যান করে আহব্বানকারীদের ফৌজদারি আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান।
তিনি বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রামে গণপরিবহনের প্রকৃত শ্রমিক নন এমন গুটিকয়েক নেতা ফেডারেশনের গঠনতন্ত্রের ২১ ধারা পরিপন্থী চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির নেতৃত্বকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করার অশুভ উদ্দেশ্যে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। যা বেআইনি ও অযৌক্তিক। তাদের ঘোষিত দাবি হলো-চাঁদাবাজিসহ নানাবিধ অপকর্মের বৈধতা দেওয়া। কারণ তারা অধিকাংশই মাদকাসক্ত। নিজেদের মধ্যে চাঁদাবাজির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ঘটনা ঘটিয়ে সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের ওপর দোষ চাপিয়ে অপকর্মের বৈধতা নিতে ধর্মঘট ডেকেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুন্ড আসনের সংসদ সদস্য দিদারুল আলম বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা আমার বাসায় এসেছিলেন ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে। তখন আমি গণপরিবহনের ভাড়া কমাতে বললে তারা জানান, এ রুটের ২৬৫ গাড়ি থেকে প্রতিদিন ৩৮০ টাকা করে চাঁদা নেন শ্রমিকরা। তাই ভাড়া কমানো সম্ভব নয়।