শেখ হাসিনা চাইলে ‘না’ বলবেন না মুহিত

54

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘চাইলে’ আরও কিছুদিন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে আপত্তি করবেন না আবুল মাল আবদুল মুহিত। ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিন গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন পঁচাশি পেরুনো এই রাজনীতিবিদ। অর্থমন্ত্রী হিসেবে ১২ টি বাজেট ঘোষণা করা মুহিত অবসরের কথা বলে আসছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি অংশ নেননি।
সিলেটে মুহিতের আসনে এবার আওয়ামী লীগের টিকেটে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন তার ভাই এ কে আব্দুল মোমেন। নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে এবার। খবর বিডিনিউজের
আওয়ামী লীগের নতুন মন্ত্রিসভায় কারা থাকছেন, সেই আলোচনায় মুহিতের নামও আসছে। সংসদে না থাকলেও মুহিতকে আরও কিছুদিন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে দেখা যেতে পারে বলে গুঞ্জন চলছে দুদিন ধরে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি হেসে বলেন, ‘আমার সব কিছু তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ওপরে নির্ভর করে। তিনি চাইলে তো আমি না করতে পারব না’।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনা তার সরকারের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে আনেন বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা মুহিতকে, যিনি এইচ এম এরশাদের সরকারেও কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৩ সালের জুনে মহাজোট সরকারের পঞ্চম বাজেট উপস্থাপনের আগেই মুহিত বলেছিলেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিলেও তিনি আর মন্ত্রী থাকতে চান না। তবে দশম সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগই ক্ষমতায় থাকে, মুহিতও অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থেকে যান। ২০১৮ সালের জুনে আওয়ামী লীগ সরকারের হয়ে নিজের দশম বাজেট ঘোষণা করেন তিনি।
একাদশ সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে এলে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মুহিত বলে আসছিলেন, তিনি আর নির্বাচন করতে চান না। কেন নির্বাচনে দাঁড়াবেন না- সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি গত নভেম্বরে বলেছিলেন, ‘আমি অবসর নিতে চাই, আমার মনে হয় আমার অবসর নেওয়া উচিত’। মন্ত্রিত্ব আর না করার যে ঘোষণা মুহিত আগে দিয়েছিলেন, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, নতুন সরকারের প্রথম বাজেট পর্যন্ত তিনি থেকে গেলে আওয়ামী লীগের প্রতিশ্রুত ‘উন্নয়নের ধারাবাহিকতা’ রক্ষায় কোনো সুবিধা হবে কি না?
জবাবে তিনি বলেন, ‘সেটা ঠিক। আমাদের সরকার পর পর দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার কারণে যে ধারাবাহিকতার সৃষ্টি হয়েছিল; সেজন্যই এই উন্নয়ন হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে অবিশ্বাস্য উন্নয়ন হবে বলে আমি মনে করি। ২০৩০ সালের মধ্যে যে দারিদ্র্য নির্মূল করতে চেয়েছিলাম সেটা আর লাগবে না। ২০২৫ সালের মধ্যে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে যাব’। মুহিত বলেন, ‘সেই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী যদি আমাকে অনুরোধ করেন অর্থমন্ত্রী থাকতে, তাহলে তো আমি না করতে পারব না। সেক্ষেত্রে আরও কিছুদিন আমি দায়িত্ব পালন করে যাব’।