লাখো দোকান কর্মচারীর এখন চরম দুর্দিন

42

নগরীর লাখো দোকান কর্মচারীর সংসার চলছে না। তাদের বড়ই দুর্দিন। হাতে অর্থ নেই, দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। তাই তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নগরীতে এক লাখের বেশি দোকান কর্মচারী রয়েছে। তারা কাপড়ের দোকান, ইলেকট্রিক পার্টস, লন্ড্রি, সেলুন, জুয়েলারি, কম্পিউটার, হার্ডওয়ারসহ বিভিন্ন দোকানে চাকুরি করে সংসার চালাতো। এসব কর্মচারীরা মাসে ৮ হাজার থেকে ১৫ হাজার পর্যন্ত বেতন পায়। এ টাকা দিয়ে ঘর ভাড়া, খাওয়া, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়াসহ যাবতীয় খরচ করে কোনমতে দিনাতিপাত করে।
সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি চলছে। এ ছুটিতে বন্ধ রয়েছে ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া সকল প্রকার দোকানপাট। তারা মার্চ মাসের বেতন পেলেও বেশিরভাগই এপ্রিল মাসের বেতন পায়নি। অনেকের হাতে সঞ্চয়ের কিছু টাকা থাকলেও তাও অনেক আগে শেষ হয়ে গেছে। হতদরিদ্ররা সরকারি বেসরকারি সাহায্য সহায়তা পেলেও তাদের কপালে এর কিছুই জোটেনি। ঈদের আগে সরকার দোকান খোলার নির্দেশনা দিলেও মালিক সমিতি দোকান খুলতে রাজি হয়নি। কর্মচারীদের ধারণা ছিল, দোকান খুললে বেতন বোনাস পেয়ে যাবেন। তাতে সংসার চালাতে কোন অসুবিধা হবে না। কিন্তু তাও হল না।
মাসুম আহমেদ নামে এক দোকান কর্মচারী জানান, তিনি গেল মাসের বেতন পাননি। সংসার চালাতে পারছেন না। কেউ তার খবরও নিচ্ছে না। খেয়ে না খেয়ে তাদের দিন যাচ্ছে।
জানা যায়, নগরীর অধিকাংশ দোকান কর্মচারী বেতন এখনো পাননি। তাদের চরম দুর্দিন চলছে। তারা চোখে মুখে অন্ধকার দেখছে। কর্মচারীদের কেউ কেউ গ্রামের বাড়ি চলে গেছে, আর অনেকে শহরেই রয়েছে। তবে সকলেই ঘর ভাড়ার জন্য বিপাকে পড়েছেন। বাড়ির মালিক তাগাদা দিলেও পারছে না ঘর ভাড়া পরিশোধ করতে। তাদের অধিকাংশই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, অন্য কোন আয়ের পথও নেই তাদের। তাই তারা তাদের সংসার চালাতে পারছে না।
হার্ডওয়ার দোকানের কর্মচারী মিজানুর রহমান জানান, মার্চ মাস কোনমতে চলতে পারলেও এখন খুব কষ্ট হচ্ছে। দিন কাটছে না কোনভাবেই।
টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান বলেন, দোকান বন্ধ থাকলেও কর্মচারীদের বেতন পরিশোধের কথা মালিকদের বলে দেয়া হয়েছে। কারো বেতন বাকি রাখা যাবে না।