নির্বাচন কমিশন ও পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে রোহিঙ্গা নাগরিকদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট প্রাপ্তির বিষয়টি বেশ আলোচনায় আসার পর তোড়জোড় শুরু হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করাসহ কিছু নিয়মনীতিতে আনা হয় পরিবর্তন।
এরপরেও বন্ধ নেই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি নাগরিক বানানোর কার্যক্রম। অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় পাসপোর্ট বানিয়ে বিভিন্ন দেশে পাচার করা হচ্ছে রোহিঙ্গা নাগরিকদের। এ ক্ষেত্রে প্রধান টার্গেট করা হচ্ছে রোহিঙ্গা নারীদের।
গতকাল রোববার রাজধানীর রামপুরার আফতাবনগর এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এমনই এক মানবপাচারকারী চক্রের সন্ধান পেয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৩)।
ওই বাসা থেকে ১৩ জন রোহিঙ্গা নারী উদ্ধারসহ আটক করা হয়েছে চক্রের দুই সদস্যকে। তাদের বিদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে জড়ো করা হয়েছিল বলে সন্দেহ কর্মকর্তাদের। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ পাসপোর্ট, ভুয়া জন্মনিবন্ধনের কপি, জন্মনিবন্ধন ফরম এবং পাসপোর্ট ফরম উদ্ধার করা হয়েছে। আটক মানবপাচারকারী চক্রের দুই সদস্য হলেন- কবির আহমেদ (৪০) ও এমরান (২৮)। খবর বিডি ও বাংলানিউজের
র্যাব-৩ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ বি এম ফয়জুল ইসলাম বলেন, আফতাব নগরের ২ নম্বর সড়কের একটি বাড়ির ওই ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার মিয়ানমারের নাগরিক ১৩ তরুণীর সবার বয়স ১৮ বছরের কাছাকাছি। সেখান থেকে কবির আহমেদ (৪০) ও মো. এমরান (২৮) নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তাদের কাছ থেকে অনেকগুলো পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন সনদ, জন্মনিবন্ধনের ফরম, পাসপোর্টের ফরম উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান ফয়জুল ইসলাম।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তাররা স্বীকার করেছে গত ডিসেম্বর মাসে সাতজন এবং চলতি মাসে এ পর্যন্ত পাঁচজনকে দেশের বাইরে পাচার করেছে তারা। মূলত এই চক্রটি এসব তরুণীদের দেশের বাইরে যৌনকর্মী হিসেবে ব্যবহারের জন্য আন্তর্জাতিক পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে দেয়।
র্যাব কর্মকর্তা ফয়জুল জানান, তারা ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহায়তায় এসব তরুণীদের পাসপোর্ট বানিয়ে দেন। সেই পাসপোর্ট দিয়ে মালয়েশিয়া ও দুবাই পাঠিয়ে দেয়। সেখানে বারে কাজ বা যৌনকর্মে জড়াতে তাদের বাধ্য করা হয়।
গ্রেপ্তার দুজনের বাড়ি টেকনাফে জানিয়ে এই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে চক্রটি বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের তরুণীদের কৌশলে ঢাকায় নিয়ে আসে এবং পাচার করে থাকে।
