রেলওয়ে জাদুঘরের পাশেই হচ্ছে শেখ রাসেল শিশুপার্ক

63

নগরীল পাহাড়তলী রেলওয়ে জাদুঘরের পাশেই আমবাগান শহীদ শাহজাহান মাঠ সংলগ্ন জায়গায় প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্যে নির্মিত হচ্ছে শেখ রাসেল শিশুপার্ক। শিশুদের আনন্দ-বিনোদনের পাশাপাশি নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এ পার্কটি নির্মাণ করছে। রেলওয়ের প্রায় দুই একর জায়গা জুড়ে অনেকটা ডিসি হিলের আদলে পার্কটি গড়ে তুলতে ব্যয় করা হচ্ছে ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
গতকাল সকালে পার্কটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। পার্কের কাজ দ্রæত শেষ করে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে সিটি মেয়র নগরীর সৌন্দর্যবর্ধন ও সবুজায়নে সবার সহযোগিতা কামনা করে বলেন, নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে চট্টগ্রাম নগরীকে গ্রিন ও ক্লিন নগরীতে পরিণত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করি। টাইগারপাস, দেওয়ানহাটসহ পুরো নগরীতে বিলবোর্ড উচ্ছেদ করে পূর্বের অবস্থা ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিলবোর্ড উচ্ছেদের কারণে নগরবাসী এখন নগরীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করতে পারেন। নগরবাসীকে স্নিগ্ধ-নির্মল ও দুর্গন্ধমুক্ত সকাল উপহার দেওয়ার জন্য রাতে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে। আমরা চাই নদী, সাগর ও পাহাড়ের মেলবন্ধনে নগরীর যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে, তা ফিরিয়ে আনতে।
চসিকের জনসংযোগ শাখা জানিয়েছে, একনেকে অনুমোদন হওয়া চসিকের ১২০ কোটি টাকার বিভিন্ন এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ পার্ক এর অর্থায়ন হচ্ছে। পার্কের ডিজাইন ও ড্রয়িং তৈরি করেছে ‘ত্রিমাত্রিক’ ও ‘অ্যাডিপিস’ নামের দুটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান।তাদের ডিজাইনেই পার্কের নির্মাণ কাজ চলছে। এ পার্ক নির্মাণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে এনজেডএইচ (জেবি)।
নগরবাসীর আনন্দ ও বিনোদনের সুবিধার জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এ উদ্যোগ নিয়েছে। এখানে ডিসি হিলের আদলে পাহাড়তলী রেলওয়ে জাদুঘরের নিচে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তত্ত¡াবধানে বঙ্গবন্ধুর কণিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের নামে নির্মাণ করা হচ্ছে এ শিশুপার্ক। এ পার্ক তৈরি হলে শিশুদের বিনোদনের সুযোগের পাশাপাশি পার্কটিতে নগরীবাসীর আনন্দ বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ পার্ককে কিডস্ জোন, শিশুদের জন্য হাতি-ঘোড়ার রেপ্লিকা ও রাইডসহ খেলনা সামগ্রী, স্মৃতিসৌধ, ড্রেসিং রুমসহ মুক্তমঞ্চ, গ্যালারি, দর্শনার্থীদের বসার জায়গা, রেস্টুরেন্ট, শহীদ মিনার, বঙ্গবন্ধু ও শেখ রাসেলের ম্যুরাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের উল্লেখযোগ্য দিকের বক্তব্য প্রদর্শনী এবং বিভিন্ন জাতীয় দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান করার সুযোগ থাকবে।
এতে আরও থাকছে আলোকায়নের ব্যবস্থা, বাগান, পার্কিং স্পেস, পারগোলা, পাবলিক টয়লেট, ওয়ার্কওয়ে, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নিরাপদ হাঁটার জন্য আলাদাভাবে পেভিং টাইলস পথও থাকবে। পার্কের পাশাপাশি অনুষ্ঠানের জন্য একটি বড় মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। যাতে সাংস্কৃতিক কর্মকাÐ পরিচালনা করা যায়। এ মঞ্চে ১ হাজারের মত দর্শনার্থী বসতে পারবে। পাহাড়তলী রেলওয়ে যাদুঘরসহ আশপাশের পুরো এলাকাটি প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্য ভরপুর। সবুজের সমারোহে সাজানো গোছানো এলাকাটি যে কোন কাউকে ক্ষণিকের জন্য আনন্দ দেবে। এ পাহাড়ের উপর রয়েছে শতাব্দির পুরানো রেলওয়ের জাদুঘর। তার নিচে এক টুকরো সমতল। পাহাড়ের গাছগাছালি সমলে সবুজ ঘাস নয়নাবিরাম এমন দৃশের মাঝে নির্মিত হচ্ছে শেখ রাসেল শিশু পার্ক। জায়গারটির মালিক রেলওয়ে। পার্কটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
উদ্বোধনকালে চসিক কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হীরণ, নাজমুল হক ডিউক, হাসান মুরাদ বিপ্লব, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবিদা আজাদ, টিআইসির পরিচালক নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার, চসিক তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার আবু সালেহ, প্রকৌশলী গোফরান উদ্দিন, সহকারী প্রকৌশলী অলি আহমদ, উপসহকারী প্রকৌশলী ফরিদ আহমদসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।