রমজানের শুরুতেই মার্কেটমুখী ক্রেতারা

65

‘মনে রেখ’। মনে রাখার মতো উপহার দিয়ে এবার ক্রেতা সন্তুষ্ট করতে চায় টেরিবাজারের বিখ্যাত শপিং মলটি। প্রতিষ্ঠানের একযুগ পূর্তি উপলক্ষে এমন আয়োজন নিয়ে এসেছেন তারা। তাইতো আগেভাগে মার্কেটে আসা ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় শপিং মলটি এগিয়ে আছে। টেরিবাজারে ‘মনে রেখ’ এর মতো অন্যান্য দোকানগুলোতেও ক্রেতাদের উপস্থিতি বাড়তে শুরু করেছে। টেরিবাজারের অলিগলিতে দিনভর ক্রেতার ভিড়। রমজানের শুরুতেই এবার ঈদের বাজার সারতে তৎপর ক্রেতারা।
‘মনে রেখ’ এর সত্ত¡াধিকারী ওসমান গনি পূর্বদেশকে বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ক্রেতার সংখ্যা বেশি। প্রতিষ্ঠানের ১২ বছর পূর্তি উপলক্ষে এবার ক্রেতাদের সন্তুষ্ট করতে উপহারের ব্যবস্থা করেছি। ক্রেতাদের কিছু গিফট দিয়ে যুগপূর্তি স্মরণীয় রাখতে চাই। ক্রেতাদের পণ্য ক্রয়ে সহযোগিতা করতে ২৫ জন কর্মচারী রাখা হয়েছে।’
টেরিবাজারের মতো নিউ মার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, আফমি প্লাজা, মিমি সুপার মার্কেট, গুলজার টাওয়ার, ইউনেস্কো সিটি, সেন্ট্রাল প্লাজা, রেয়াজউদ্দিন বাজার, স্যানমার ওশান সিটি, মতি টাওয়ার, জহুর হকার্স মার্কেটের মতো নামিদামি মার্কেটগুলোতে ক্রেতার উপস্থিতি লক্ষ্যনীয়। ঈদের বাকি ৩০ দিন থাকলেও এবার আগেভাগেই কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন ক্রেতারা। কয়েকটি মার্কেট ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, নিউমার্কেটে ক্রেতার উপস্থিতি বেড়েছে। বিশেষ করে ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতেই ক্রেতাদের ভিড়। আপাতত নিচতলার দোকানগুলোতে বাড়তি ক্রেতা থাকলেও উপরে ক্রেতার ভিড় বাড়েনি। পরিধেয় পোশাক কিনতেই ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। টেরিবাজারে মহিলাদের উপস্থিতি বেশি। রমজান শুরুর তিনদিন আগে থেকেই এ মার্কেটটি ক্রেতায় ঠাসা। ক্রেতা বাড়ার কারণে সড়কটির একপাশ বন্ধ রাখা হয়েছে।
পাশাপাশি খাতুনগঞ্জগামী ট্রাক চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যে কারণে ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করতে পারছেন। এই মার্কেটে পাঞ্জাবী, শাড়ি, পিচ কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতার উপস্থিতি বেশি। শপিং কমপ্লেক্সেও ক্রেতার উপস্থিতি দেখা গেছে। বিশেষ করে শিশুদের নিয়ে কেনাকাটায় সময় ব্যয় করছেন মা-বাবারা। জুতা, সেন্ডেল ও পাঞ্জাবী কেনায় ব্যস্ত সেখানকার ক্রেতারা। এ মার্কেটের নিচতলায় কিডস আইটেমের জন্য বিখ্যাত ‘শৈশব’ দোকানটিতে ক্রেতাদের ভিড় ছিল। উচ্চবিত্তদের মার্কেট হিসেবে পরিচিত সানমার ওশান সিটিতে ক্রেতাদের উপস্থিতিও বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল বিকাল থেকে সেখানে ক্রেতা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এবার আগেভাগে ক্রেতার উপস্থিতি বাড়লেও ব্যবসায়ীরা ১৫ রমজানের পর থেকেই জমজমাট বিকিকিনি হবে বলে আশা করছেন। আবহাওয়া ভালো থাকলে এবার রেকর্ড পরিমাণ ব্যবসা হওয়ার কথা জানান ব্যবসায়ীরা। যে কারণে বিভিন্ন মার্কেটে অফারসহ ক্রেতাদের সুবিধার্থে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও করা হয়েছে মার্কেটগুলোতে।
টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহমদ হোছাইন পূর্বদেশকে বলেন, ম্যাক্সিমাম সেল্স, মিনিমাম প্রপিট নিয়মে এবারের বেচাকেনার টার্গেট নেয়া হয়েছে। ক্রেতাদের চলাচলের সুবিধার্থে টেরিবাজার সড়কে ট্রাক চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ক্রেতাদের নিরাপত্তায় থাকবে ২০ জন। এছাড়াও নির্দিষ্ট ও সাদা পোশাকে দুই শিফটে পাঁচজন করে দশজন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। সিসি টিভি ও অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে মার্কেটে। এবার আগেভাগেই ক্রেতার উপস্থিতি দেখে ব্যবসায়ীরা খুশি আছেন।
২০১০ সালে চালু হওয়া আফমি প্লাজায় সাততলা মার্কেটের প্রতি ফ্লোরেই ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে জুয়েলারি, থান কাপড়, বুটিকস্ ও কসমেটিকসের দোকানগুলোতে নারী ক্রেতার সংখ্যা বেশি। দরদাম করে পছন্দের পণ্য ক্রয়ে আগেভাগেই ঈদের কেনাকাটার পূর্ণরূপ ফিরেছে মার্কেটটিতে। রামিশা ফ্যাশনের মালিক বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় ঈদ উপলক্ষে এবার প্রচুর মালামাল তোলা হয়েছে। গত দুই বছর ব্যবসা খারাপ গেলেও এবার ভালো হবে বলে আশা করছি।