রক্তপাত করে কোনো দিন শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়না

50

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় উপজেলা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন শেষে ফেরার পথে ব্রাশফায়ারে সাতজন নিহতের ঘটনায় হতাহতদের পরিবারকে মাঝে অনুদান দিতে গতকাল রবিবার দুপুরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা বলেন, পাহাড়ের জনপদ যারা অশান্ত করে তুলেছেন, তাদের প্রতি আমার অনুরোধ আপনারা সংঘাতের পথ পরিহার করুন, অনাকাক্সিক্ষত সহিংস কর্মকান্ড থেকে বেরিয়ে আসুন।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিহার করে নিজেরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করুন, অন্যদেরকেও নিরাপদে বসবাস করার সুযোগ দিন। অস্ত্র দিয়ে প্রাণহানির মধ্যদিয়ে রক্তপাত করে কোনো দিন শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। সংঘাত শুধু সংঘাত বাড়াতে থাকে। দুটি হত্যা হলে তা আরও চারটি হত্যার পথ সৃষ্টি করে। আপনারা জানেন, সুন্দরবনের জলদস্যুরা, কক্সবাজারে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে, আপনারাও রক্তপাতের পথ থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুন। অন্যথায় আপনাদের রেহাই করা হবে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলাল উদ্দিন, সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এসএম মতিউর রহমান, চট্টগ্রাম রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজি খন্দকার মো. গোলাম ফারুক, জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধনের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হামিদুল হক, বিজিবির খাগড়াছড়ি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল গাজী মোহাম্মাদ সাজ্জাদ, ২৭ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহাবুবুল ইসলাম, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক সহিদুল ইসলাম, রাঙামাটি পুলিশ সুপার মো. আলমগীর কবীর, খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আহমারউজ্জামান প্রমুখ।
মতবিনিময় শেষে নিহত ও আহতদের স্বজনদের হাতে চেক বিতরণ করেন সিইসি।
উল্লেখ্য, গত ১৮ মার্চ দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হয় বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচনে দিনভর দায়িত্বপালন শেষে নির্বাচনী সরঞ্জামসহ উপজেলা সদরে ফিরছিলেন নির্বাচনী কর্মকর্তা, কর্মচারী ও নিরাপত্তাকর্মীদের দল।
দিঘীনালা-মারিশ্যা সড়কের ৯ কিলোমিটার নামক এলাকায় পৌঁছামাত্র নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে অজ্ঞাত বন্দুকধারী সন্ত্রাসীরা।
এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ৬ জন। যাদের মধ্যে ছিলেন নির্বাচনী দায়িত্বপালন করা শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী ও আনসার-ভিডিপি সদস্য। রাতে বাঘাইছড়ি থেকে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম নেয়ার পথে মারা যান গুলিবিদ্ধ সহকারি শিক্ষক মো. তৈয়ব। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে পুলিশ ও আনসার-ভিডিপি সদস্য,স্কুল-কলেজের শিক্ষকসহ আহত হন অনেকেই।