যে কারণে যুবলীগের দায়িত্ব নিতে চান ভিসি মীজান

20

উপাচার্য (ভিসি) পদের চেয়ে যুবলীগের দায়িত্ব নেওয়াকে কেন বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছেন, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ভিসি ড. মীজানুর রহমান। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে আমার ভিসি পদ ছেড়ে যুবলীগের দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়ে যে খবর প্রকাশিত হয়ে আসছে, সেখানে ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ রয়েছে। মূলত একসঙ্গে দু’টি কাজ না করার বিষয়টি বোঝাতে গিয়ে যুবলীগের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেছি। গতকাল শনিবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই ব্যাখ্যা দেন।
ড. মীজান বলেন, মার্জিত শিক্ষিত লোকেরা রাজনীতিতে না এলে অযোগ্যরাই তাদের শাসক হয়ে বসবে। যোগ্যদের জন্য এটি প্রাকৃতিক শাস্তি। তিনি আরও বলেন, টেন্ডারবাজি, ক্যাসিনোসহ নানা দুর্নীতিতে যুবলীগের এক শতাংশ জড়িত। বাকি যে লাখ লাখ নেতাকর্মী আছেন, যারা করার মতো কোনও কাজই পাননি, তাদের সহযোগিতায় দেশ গড়ার দায়িত্ব পেলে আমি সেই দায়িত্ব নিতে আগ্রহী।
যদিও মীজানুর রহমান গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় একটি বেসকারি টিভি চ্যানেলে অনুষ্ঠিত টকশোয় বলেছেন, ‘আমাকে যদি বলা হয়, আপনি যুবলীগের দায়িত্ব নিতে পারবেন কিনা, সঙ্গে সঙ্গে উপাচার্যের পদ বা চাকরি ছেড়ে দেবো এবং যুবলীগের দায়িত্ব নেবো।’ এমনকি আজ রবিবার যুবলীগের অনুষ্ঠিতব্য মিটিংয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান ওমর ফারুক উপস্থিত থাকবেন বলেও তিনি অনুমান করেছেন। একইসঙ্গে আগামীতে ওমর ফারুক যুবলীগের চেয়ারম্যান থাকবেন না বলেও তিনি অনুমান করেছিলেন। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. মীজান বলেন, ‘বিষয়টা বুঝতে হবে। আমি ভিসির পদ ছেড়ে যুবলীগের দায়িত্ব নেবো, এমন কোনও বিষয় ছিল না। ভিসি একসঙ্গে দুটি কাজ করতে পারেন না, সেটা বোঝাতেই বলেছি। অথচ যার যা খুশি, তাই লিখছে।’
কেন যুবলীগের দায়িত্ব নিতে আপনি আগ্রহী এমন প্রশ্নের জবাবে এই উপাচার্য বলেন, ‘যুবলীগের যে এক শতাংশ দুর্নীতিপরায়ণ, টেন্ডারবাজ, তার বাইরে গুরুত্বপূর্ণ রিসোর্স হিসেবে বিশাল যুবসমাজ রয়েছে। যারা দল ভালোবাসে, তাদের যদি কাজে লাগাতে পারি, সংগঠিত করতে পারি, তবে সেটা একটি ভালো কাজ হবে। ছাত্রলীগ-যুবলীগে যদি টাউট-বাটপাররা আসে, তাহলে তারা তো পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগেই যাবে। ফলে দল তো আসলেই তখন তাদের নিয়েই তৈরি হবে। সেই জায়গায় আমাদের কাজ করার আছে। যদি প্রধানমন্ত্রী চান, আমি দায়িত্ব নেই, তাহলে সেই কাজটি করতে আগ্রহী হবো। উপাচার্যের দায়িত্ব ছেড়ে দেবো।’
১৮/২০ বছর ধরে যুবলীগের কমিটিতে প্রেসিডিয়াম পদসহ বিভিন্ন পদে আছেন উল্লেখ করে ড. মীজান বলেন, ‘এখন চেয়ারম্যান নেই। নিয়ম অনুযায়ী, চেয়ারম্যান না থাকলে আমার ঘাড়েই দায়িত্ব পড়ে। কিন্তু আমি অ্যাক্টিভ নই। এখন যদি প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, আমাকে দায়িত্ব নিতে হবে, তখন আমি অ্যাক্টিভ হবো।’
তবে, ভিসি পদ ছেড়ে যুবলীগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী হওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য প্রসঙ্গে ড. মীজান বলেন, ‘যেভাবে প্রকাশিত হচ্ছে, বিষয়টি তেমন ছিল না।’
কিন্তু উপাচার্য থাকা অবস্থায়ও যুবলীগের কমিটিতে থাকা প্রসঙ্গে ড. মীজান বলেন, ‘উপাচার্য একসঙ্গে দু’টি কাজ করতে পারেন না। আমি ভিসি হওয়ার পর কমিটিতে অ্যাক্টিভ নই। তবে, যুবলীগের ক্রান্তিকালে আমাকে যদি দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে আগে আমার উপাচার্য পদ ছাড়তে হবে।’
তাহলে আপনি ভিসির মেয়াদ শেষের আগে যুবলীগের দায়িত্ব পেলে কী করবেন? এমন প্রশ্নে এই উপাচার্য বলেন, ‘যুবলীগে এখন যে সংকটে রয়েছে, সেখান থেকে সংগঠনটিকে উদ্ধার করতে যদি আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, সেই দায়িত্ব পালন করবো।’ আর তখন ভিসির দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।