যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কার্যক্রমে আবারও অচলাবস্থা

38

আইনপ্রণেতারা বাজেট পাসে ব্যর্থ হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একাংশে আবারও অচলাবস্থা (শাটডাউন) শুরু হয়েছে। মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবিকৃত ৫০০ কোটি ডলার বরাদ্দের ব্যাপারে কোনও সমঝোতা না হওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম খবর দিয়েছে, সরকারের স্বরাষ্ট্র, বিচার ও কৃষি মন্ত্রণালয়সহ সরকারি দফতরের একাংশের বাজেট বরাদ্দ ফুরিয়ে গেছে শুক্রবারেই। তবে ডেমোক্র্যাট-রিপাবলিকান দুই দলের আইনপ্রণেতাদের সমঝোতার অভাবে নতুন বাজেট পাস হয়নি। এতে শনিবার দিনের প্রথম ভাগ থেকেই ‘অচলাবস্থা’র মধ্যে পড়েছে এক চতুর্থাংশ সরকারি দফতর। বছরের তৃতীয় এই অচলাবস্থার মেয়াদ কতোদিন হতে পারে, তা নিশ্চিত নয়।
মার্কিন অর্থবছর শুরু হয় ১ অক্টোবর। তার আগেই বাজেট অনুমোদন করিয়ে নেওয়ার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকলেও সমঝোতার অভাবে কখনও কখনও কংগ্রেস তা পাস করতে ব্যর্থ হয়। এমন অবস্থায় অস্থায়ী বাজেট বরাদ্দের মধ্য দিয়ে সরকার পরিচালনার তহবিল জোগান দিতে হয়। অস্থায়ী এই বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে দুই কক্ষের অনুমোদনসহ প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের অপরিহার্যতা আছে। গত সপ্তাহে মার্কিন কংগ্রেসের দুই কক্ষেই আগামী বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারের সব বিভাগ সচল রাখতে প্রয়োজনীয় ১৩০ কোটি ডলার বাজেট বরাদ্দের একটি বিল অনুমোদন পেয়েছিল। সে সময় হোয়াইট হাউসের পক্ষে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল বিলটি অনুমোদন করা হবে। তবে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না থাকায় ট্রাম্প বিলটিতে সই করতে অস্বীকৃতি জানান।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে একাত্ম হয়ে প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান সদস্যরা বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) বাজেট বরাদ্দ বিলে দেয়াল নির্মাণের অর্থ বরাদ্দ যুক্ত করার বিষয়টি অনুমোদন করে। প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি পাস হওয়ার পরপরই ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার জানিয়েছিলেন, সিনেটে বিলটি পাস হবে না। ট্রাম্প বলেছিলেন, দেয়াল নির্মাণ প্রশ্নে বরাদ্দ না পেয়ে যদি অচলাবস্থা সৃষ্টি করতে হয়, তাহলে তিনি ‘গর্ববোধ’ করবেন। তবে শুক্রবার তিনি সব দায় চাপান ডেমোক্র্যাটদের ওপর। এক টুইটার পোস্টে ট্রাম্প বলেন: বাজেট পাস করতে ‘সিনেটে ডেমোক্র্যাটদের ভোট দরকার। তবে তারা সম্ভবত সীমান্ত নিরাপত্তা ও দেয়াল নির্মাণ প্রশ্নে বরাদ্দের বিরোধিতা করবেন, যদিও এর অপরিহার্যতা তারা বোঝেন। তিনি হুমকি দেন, ‘ডেমোক্র্যাটরা নেতিবাচক অবস্থান নিলে সরকারে অচলাবস্থা সৃষ্টি হবে এবং তা হবে দীর্ঘমেয়াদি। জনগণ উন্মুক্ত সীমান্ত আর অপরাধ চায় না’। পরে ওভাল অফিসে তিনি বলেন, সরকারে অচলাবস্থা সৃষ্টি করা না করার ব্যাপারটা এখন ডেমোক্র্যাটদের হাতে। আমি আশা করব অচলাবস্থা সৃষ্টি হবে না তবে দীর্ঘমেয়াদী অচলাবস্থার মুখোমুখি হতে আমরা প্রস্তুত।