মোদী-বিজেপিতে বিপন্ন ভারতের গণতন্ত্র

44

নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির মাধ্যমে বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারতের অনুপ্রেরণাদায়ী ধারণাকে বিপন্ন করে তুলছে বলে মন্তব্য করেছে ইকোনমিস্ট। প্রভাবশালী এ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম তাদের সর্বশেষ সংখ্যার মূল নিবন্ধ ‘অসহিষ্ণু ভারত’- এর মধ্যে এ মন্তব্য করেছে বলে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
গম বৃহস্পতিবার এক টুইটে ইকোনমিস্ট তাদের প্রচ্ছদটি শেয়ার করে লিখেছে, ‘যেভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও তার দল বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রকে বিপন্ন করছে’। ‘বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রে বিভাজন উসকে দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী’ শিরোনামের এ নিবন্ধে বলা হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী একটি হিন্দু রাষ্ট্র বানাচ্ছেন বলে দেশটির ২০ কোটিরও বেশি মুসলমান আশঙ্কা করছে। গত শতকের ৮০-র দশক থেকে অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের আন্দোলন থেকে শুরু করে বিজেপির উত্থানের চিত্র তুলে ধরে এতে ‘মোদী ও তার দল ভারতে ধর্মীয় এবং জাতীয় পরিচয় নিয়ে বিভাজন সৃষ্টির মাধ্যমে রাজনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টায় মত্ত’ বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
‘বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সনাক্তে ভারতীয়দের নাগরিকপঞ্জি বানানোর এ পরিকল্পনা দেশটির ১৩০ কোটি মানুষকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তালিকায় নাম সংকলন, বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা এবং সংশোধনী বছরের পর বছর ধরে উত্তেজনা জিইয়ে রাখতে পারে’- বলেছে ইকোনমিস্ট। এ ধরনের ইস্যু জনগণকে বিভ্রান্ত করে অর্থনীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে থেকে দৃষ্টি সরিয়ে দিতে ভূমিকা রাখবে বলেও ধারণা লন্ডনভিত্তিক এ সংবাদমাধ্যমটির। খবর বিডিনিউজের
গত বছরের নির্বাচনে বিজেপির ব্যাপক জয়লাভের পর থেকে ‘ভারতের অর্থনীতি ভয়াবহ মাত্রার শ্লথ’ উল্লেখ করে এ নিয়ে উদ্বেগের কথাও বলেছে তারা। ইকোনমিস্টের এ নিবন্ধের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে বিজেপি। দলটির নেতা বিজয় চৌথাইওয়ালে ব্রিটিশ এ সাপ্তাহিককে ‘উদ্ধৃত, যাদের মানসিকতা ঔপনিবেশিক’ বলে মন্তব্য করেছেন। ‘আমরা ভেবেছিলাম যে ১৯৪৭ সালেই ব্রিটিশরা চলে গেছে। কিন্তু ইকোনমিস্টের সম্পাদকরা এখনও ঔপনিবেশিক যুগে বসবাস করছেন। ৬০ কোটি ভারতীয় তাদের নির্দেশ না মেনে মোদীকে ভোট দেয়ার পর থেকেই তারা ক্ষিপ্ত’- টুইটারে বলেছেন বিজেপির পররাষ্ট্র নীতি ঠিক করার দায়িত্বে থাকা চৌথাইওয়ালে।
ইকোনমিস্টের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইকোনমিস্ট ইন্টিলিজেন্স ইউনিটের গত সপ্তাহে প্রকাশিত ২০১৯ সালের ‘গণতন্ত্র সূচকে’ও ভারতের বড় ধরনের অবনমন হয়েছে। ১৬৫টি দেশ ও দু’টি অঞ্চলের গণতন্ত্র নিয়ে করা এ সূচকে ভারত এবার ৫১তম হয়েছে। এতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ভারতের এই পতনের পেছনে ক্ষয়িষ্ণু নাগরিক স্বাধীনতাকে প্রাথমিক কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।