মানুষের প্রতিভাকে শক্তিতে পরিণত করতে হবে

40

হালিশহর আহমদ মিয়া সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যলয়ের নতুন ভবনসহ শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব এবং পাঠানটুলি সিটি কর্পোরেশন বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন ভবন উদ্বোধন করলেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। গতকাল রবিবার বিকেলে পৃথক সময়ে ফলক উন্মোচন করেন মেয়র।
জাইকার অর্থায়নে বিদ্যালয় দু’টির নতুন ভবন নির্মিত হয়। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ভবন দুটির মধ্যে হালিশহর আহমদ মিয়া সিটি কর্পোরেরেশন ৬ তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণে ৭ কোটি ২৩ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা এবং পাঠানটুলী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে জন্য ভবন নির্মানে ৫ কোটি ২৯ লক্ষ ৪৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
হালিশহর আহমদ মিয়া সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ২৪ হাজার বর্গফুট ও পাঠানটুলি সিটি কর্পোরেশন বালক উচ্চ বিদ্যালয় ২২ হাজার ৮শ বর্গফুটের আয়তনের মধ্যে নব নির্মিত ভবনে রয়েছে পার্কিং, ৬০ হাজার লিটার বিশুদ্ধ পানীয় জলের রেইন ওয়াটার হার্ভেজিং প্লান্ট, দুর্যোগকালীন সময়ে নিরাপদে প্রতিবন্ধী এবং গবাধি পশুর অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র, কেন্টিন, প্রশাসনিক কক্ষ, আধুনিক শ্রেণি কক্ষ, অধ্যক্ষ রুম ও শিক্ষক রুম, টয়লেট ব্লক, ১৬ জন ধারনক্ষমতা সম্পন্ন লিফট এবং আধুনিক শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বিজ্ঞানাগার (পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও জীববিদ্যা), কম্পিউটার ল্যাব, লাইব্রেরি, ১ শয্যা বিশিষ্ট ফাস্টএইড মেডিকেল রুম, ২ কেবি বিশিষ্ট জেনারেটর, ১২শ ওয়াট বিশিষ্ট সেলার বাতি, মিলনায়তন, একাউন্টস্, ইনডোর গেম সহ সুপ্রস্থ বারান্দা বহুমুখি সুযোগ সুবিধা।নতুন ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পৃথক সমাবেশে সিটি মেয়র বলেন, চসিকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ ছিল। আমি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নের পাশাপাশি শিক্ষা প্রকৌশল ও জাইকা’র অর্থায়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে মানসম্মত ও আধুনিকায়নের কাজ করছি। এর মাধ্যমে কর্পোরেশনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের মাধ্যমে স্বাস্যসম্মত পরিবেশে পড়ালেখা করার সুযোগ পাচ্ছে।
তিনি বলেন, মানুষের ভেতরে যে সুপ্ত প্রতিভা, সম্ভাবনা লুকিয়ে থাকে তা শক্তিতে রূপান্তরের মাধ্যম হচ্ছে শিক্ষা। সেই শিক্ষার আলো সমাজকে আলোকিত করতে পারে। এ লক্ষে সিটি কর্পোরেশন নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। সিটি কর্পোরেশন নগরবাসীর সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়, স্নাতক ডিগ্রি ক্লাশ ও অর্ধশতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছে। নগরবাসীর ট্যাক্সের টাকা দিয়েই এই প্রতিষ্ঠানসমূহ পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, পাঠানটুলী ও মধ্যম হালিশহর এলাকার রাস্তাঘাট নালা-নর্দমা উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে ও চলমান রয়েছে। দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডে প্রায় ৪৪ কোটি টাকা এবং পাঠানটুলী ওয়ার্ডে প্রায় ৫১ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন আজ বাস্তবায়নের পথে। এখন আমরা স্কুল-কলেজের ভর্তি, ফলাফল, হাজিরা, বেতন জমাকরণ ও দাপ্তরিক কাজসহ প্রায় সব বিষয়ে ডিজিটালাইজড করতে সক্ষম হয়েছি। আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদেরকে ডিজিটাল হতে হবে। আমাদের ডিজিটাল ল্যাব আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ও শিক্ষার্থীদের মেধা গঠনে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখবে। যা সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ও ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাব স্থাপন প্রকল্পের আওতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধিনে এই ডিজিটাল ল্যাব নির্মাণ করা হয়েছে।
এদিকে মেয়র পাঠানটুলী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা প্রদানসহ বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা সংগীত পরিবেশন করে।
পাঠানটুলী সি.ক বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আবদুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কাউন্সিলর ফেরদৌসী আকবর, চসিক প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিক প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমদ, জাইকার কনসালটেন্ট মাহবুব আলম, চসিক নির্বাহী প্রকৌশলী বিপ্লব দাশ, সহকারী প্রকৌশলী মজিবুল হায়দার, পাঠানটুলী সি.ক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চসিক প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল কাদের। অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠান প্রধান শিক্ষক নিজামুল হক শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা জাহেদ আহমেদ, তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশ, রাজনীতিক আবদুর রশীদ লোকমান, অভিভাবক সদস্য সাঈদুল আলম বুলবুল, হালিমা বেগমসহ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরস্থ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্থানীয় কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কাউন্সিলর আফরোজা কালাম, চসিক প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোমা বড়ুয়া, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. কামাল উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী অসিম বড়ুয়া, সিনিয়র শিক্ষক সরোয়ার জামান বক্তব্য রাখেন।
সভা পরিচালনায় ছিলেন সিনিয়র শিক্ষক মো. কামাল। এ সময় চসিক প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমদ, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. নিজাম উদ্দিন, মানবাধিকার কমিশন বন্দর শাখার সভাপতি হাজী মোজম্মেল হক, তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোছাইন, আবু সালেহ, মনিরুল হুদাসহ জাইকার প্রতিনিধি এবং শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি