মশা যেন ভোট খেয়ে না ফেলে নজর দেবেন

30

মশা নিধনসহ জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করে সব নাগরিকের জন্য সমান সেবা নিশ্চিত করতে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের প্রতি আহব্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের শাপলা মিলনায়তনে নব নির্বাচিত এসব জনপ্রতিনিধির শপথ অনুষ্ঠানের পর তাদের প্রতি দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
নাগরিক দুর্ভোগ লাঘবে মেয়রদের সতর্ক থাকার আহব্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাঝে মাঝে অনেকগুলো ঝামেলা চলে আসে। এখন যেমন করোনা ভাইরাস; এর আগে এসেছিল ডেঙ্গু। এখন থেকে এই (এইডিস) মশা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিতে হবে।
মশা আপনার ভোট যেন খেয়ে না ফেলে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। ক্ষুদ্র মশা হলেও অনেক শক্তিশালী এটা মাথায় রাখতে হবে। সেদিকে আপনারা বিশেষভাবে একটু নজর দিবেন। যেন সঠিকভাবে মশা নিধন হয়। গত বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হওয়ার পর বর্ষার শেষ দিকে এইডিস মশার প্রকোপ বেড়ে গেলে সিটি করপোরেশনের তৎপরতা নিয়ে সমালোচনা হয়। মশাবাহিত প্রাণঘাতী এই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। আগামী মৌসুমে মশা নিধনে আগাম পদক্ষেপ নেওয়ার উপর জোর দিয়েছেন কীটতত্ত¡বিদরা। খবর বিডিনিউজের
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সদ্যবিদায়ী মেয়র সাঈদ খোকনের এবার দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ার পেছনে মশা নিধনে তার ব্যর্থতাকে কারণ হিসেবে দেখেন অনেকে। তার জায়গায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে তাপস জয়ী হয়েছে।
নব নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরকে উন্নয়ন প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকার পাশাপাশি দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের কাছে আপনারা ওয়াদাবদ্ধ। আপনারা যে শপথ নিয়েছেন সেই শপথের কথা মনে রেখে নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসাবে যারা আপনাকে ভোট দিয়েছে এবং যারা দেয় নাই- অর্থাৎ এলাকাবাসী সবার জন্য সমানভাবে কাজ করতে হবে। আপনি যখন নির্বাচিত হয়ে এসেছেন তাহলে আপনি সকলের। সেই দিকটা মাথায় রেখেই সার্বিক উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হবে।
সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম ও দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসসহ কাউন্সিলররা শপথ নেন। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা, সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও ঊর্ধতন সরকারি কর্মকর্তারা সেখানে ছিলেন।
শপথ শেষে নতুন জনপ্রতিনিধিদেরকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। আমি চাই এসব প্রকল্পে যেন কোনো দুর্নীতি না হয়, অনিয়ম না হয়। আমি কিন্তু কাউকে ছাড়বো না; এটা হল বাস্তবতা। কারণ আমি জানি আমার সময় খুব কম।
একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্বাচিত হই। এই সময়ের মধ্যে যেই কাজগুলি করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেই কাজগুলি আমি সম্পন্ন করতে চাই। সেই ক্ষেত্রে কেউ যদি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বা কোনো রকম দুর্নীতি করে, বা কোনো রকম নয় ছয় করে, তার বিরুদ্ধে যথযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেখানে কোনো মুখ চাওয়া-চাওয়ি হবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে, অভিযান চলতে থাকবে। সেখানে আপনাদের সহযোগিতা চাই। সমাজের এই ক্ষতগুলি থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে হবে। না হয় আপনাদের সন্তান, ভবিষ্যত প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আগামী ১৭ মার্চ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিতব্য বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নব নির্বাচিত মেয়র-কাউন্সিলরদেরকে আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী।