বন্ধুদের দাওয়াত খাওয়াতে গ্রামে এসেছিলেন এমরান

104

‘ছুরিকাঘাতে নিহত ইউপি সদস্য এমরান চৌধুরী গত ২০ বছর ধরে পরিবার-পরিজন নিয়ে নগরীর মোহাম্মদপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। মাত্র দুই মাস হলো তিনি তাঁর মাকে হারিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি উল্লেখযোগ্য সময় গ্রামেও আসেননি। গত সোমবার সকালে নিজ গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন এমরান। উদ্দেশ্য ছোট বেলার বন্ধুদের দাওয়াত খাওয়ানো। তাইতো সেদিন দুুুপুরে বাজারে গিয়েছিলেন মুরগি কিনতে। তিনি কি জানতেন ‘ন্যায্য কথা’ বলার অপরাধে তাকে ছুরিকাঘাতে খুন হতে হবে? এভাবে এতো অল্প সময়ে এ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে এমরানের চলে যাওয়াকে আমরা এখনো মেতে নিতে পারছি না’। অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এমরান চৌধুরীর ছোট বেলার বন্ধু ও চাচাতো ভাই বেলাল চৌধুরী। গতকাল বুধবার বিকেলেও এমরানের বাড়িতে চলছিল শোকের মাতম। বাবার জন্য তিন মেয়ের মাতম উপস্থিত মানুষগুলোর মনকে নাড়িয়ে যায়। বাবার মৃত্যুকে মেনে নিতে না পারা এমরানের মেজো মেয়ে চলমান এসএসসি পরীক্ষার্থী ইসমু বারংবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। থেকে থেকে বাবাকে খুঁজছেন। শোকাহত পরিবারের সদস্যদের শান্ত করার শক্তি ছিল না উপস্থিত স্বজনদের।
স্বামীর শোকে নির্বাক ডেইজি আক্তার। প্রাণপ্রিয় মানুষটিকে নিয়ে স্বপ্লের জাল বুনা ডেইজি মেনেই নিতে পারছেন এমরানের এভাবে চলে যাওয়া। মূহুর্তের মধ্যেই কল্পিত স্বপ্নগুলো এলোমেলো হয়ে যাওয়ার অসহ্য কষ্ট যেন তাকে নির্বাক করেছে।
গত মঙ্গলবার গড়দুয়ারা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে এমরানকে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে তার মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে হাটহাজরী মডেল থানায় গতকাল বুধবার রাতে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন এমরান চৌধুরীর ছোট ভাই ইয়াছিন আরফাত চৌধুরী।
ঘটনার সাথে জড়িতদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বেলাল উদ্দীন জাহাংগীর।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কের হাটহাজারী উপজেলার মেখল ইউনিয়নের ইছাপুর ফয়জিয়া বাজারে ইউপি সদস্য মো. এমরানকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে মেখল ইউনিয়নের চাঁদগাজী চৌধুরী বাড়ির মো. ফরিদের ছেলে মো. জামশেদ নামে এক যুবক। ওই দিন রাত ২ টার দিকে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এমরান গড়দুয়ারা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের কামদর (প্রকাশ কান্দর) আলি চৌধুরী বাড়ির ওমর চৌধুরীর ছেলে।