পুঁজিবাজারে বড় পতন, কারণ পাচ্ছে না কেউ

16

সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে পদক্ষেপের পরও পুঁজিবাজারে পতন ঠেকানো যাচ্ছে না। রবিবার এক দিনেই সূচকে ১০০ পয়েন্ট হারিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর। এতো পদক্ষেপের পরও কেন বাজার পতনের ধারায়, তা বুঝতে পারছেন না পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরাও। এ জন্য উদ্বিগ্ন তারা। সপ্তাহের প্রথম দিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ১০০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২১ পয়েন্ট কমেছে। এনিয়ে টানা তিন কর্মদিবসে ডিএসইএক্স ১৮০ পয়েন্টের মতো পড়ে গেছে।
অন্য বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৩০৫ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২৮ পয়েন্ট কমেছে।
জানুয়ারিতে বড় ধসের পর পুঁজিবাজার জাগাতে গত ১০ ফেব্রæয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার আওতায় ব্যাংকগুলোকে ‘বিশেষ তহবিল’ গঠনের সুযোগ দেওয়ার পর থেকে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। টানা কয়েক দিন লেনদেনের পাশাপাশি সূচকও বাড়ে। বাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসতে শুরু করেছিল। কিন্তু ২৪ ফেব্রূয়ারি থেকে বাজারে ফের লেনদেন ও সূচক কমতে শুরু করে।
প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের পরও বাজারের এই দরপতনে উদ্বিগ্ন বাজার বিশ্লেষকরা। তারা বুঝে উঠতে পারছেন না, জানুয়ারিতে বড় ধসের পর এক মাস যেতে না যেতেই কেন ফের বড় পতন হচ্ছে। কেন এই পতন- এ প্রশ্নে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, ‘কিছুই বুঝতে পারছি না ভাই; এতো কিছুর পর কেন পতন হচ্ছে বাজারে? কি বলব, আমার কোনো মন্তব্য নেই’।
শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হাসান বলেন, ‘কেন এভাবে পড়ছে, বলতে পারছি না’।
আরেক বাজার বিশ্লেষক ডিএসইর সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘আমরা হতাশ ভাই। জানি না কি হচ্ছে। বড় ধসের পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাজারের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তারপরও বড় পতন হচ্ছে। বিষয়টি পরিষ্কার না’।
বাজার পরিস্থিতি
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল রবিবার দুই বাজারে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৫৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে ৩০৪ টির দরই কমেছে। বেড়েছে মাত্র ৩৭ টির; আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টি কোম্পানির শেয়ারের দর। অন্যদিকে সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৪৫টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে মাত্র ৩১ টির দর বেড়েছে; কমেছে ১৯৬ টির। অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮ টির দর।
ঢাকায় প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯৭ দশমিক ১০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪ হাজার ২৮৭ দশমিক ৩৮ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ১৬ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৯৯৯ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ সূচক ২৭ দশমিক ২৪ কমে নেমে এসেছে ১ হাজার ৪৩৫ পয়েন্টে। খবর বিডিনিউজের
চট্টগ্রামে প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৩০৫ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৩ হাজার ৯৮ দশমিক ১২ পয়েন্টে। গতকাল রবিবার ডিএসইতে ৪২৮ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহের শেষ দিন গত বৃহস্পতিবার লেনদেনের অঙ্ক ছিল ৪১৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
সিএসইতে ২০ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বৃহস্পতিবার লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা।