পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সংবাদ সম্মেলন

59

পাহাড়ের বাঙালিনিয়ন্ত্রিত বিদ্যমান সব আঞ্চলিক সংগঠন বিলুপ্তি ঘোষণা করে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ’ গঠন করা হয়েছে। এখন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত নিপীড়িত ও বঞ্চিত সকল মানুষের স্বার্থ রক্ষায় সংগঠনটি কাজ করবে। সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ হওয়া নতুন এ সংগঠনটির নেতারা রাঙামাটিতে সংবাদ সম্মেলনে এমন ঘোষণা দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাঙামাটি পৌরসভা মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে সংগঠনটি। এসময় নেতারা বলেন, খুব শিগগির পার্বত্য চট্টগ্রামের সবক’টি উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয়
কমিটি ঘোষণা করা হবে। এতে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ’ ও ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা পরিষদ’ নামে শুধুমাত্র দু’টি অংগ-সংগঠন থাকবে’। পরে পৌরসভা হতে জেলা প্রশাসক কার্যালয় পর্যন্ত ‘পরিচিতি শোভাযাত্রা’য় অংশ নেন নেতাকর্মিরা।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সদ্য বিলুপ্ত হওয়া সংগঠন ‘সম-অধিকার’ এর মহাসচিব মো. মনিরুজ্জামান। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদ্য বিলুপ্ত হওয়া সংগঠন ‘পার্বত্য গণ পরিষদ’ সভাপতি ও জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক অ্যাড. পারভেজ তালুকদার। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন বাঘাইছড়ি পৌরসভার সাবেক মেয়র ও নাগরিক পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মো. আলমগীর কবির।
সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম, বাঙালি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি সাব্বির আহমেদ, আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি টেলিভিশন এসএ টিভির জেলা প্রতিনিধি মোহাম্মদ সোলায়মান, নাগরিক কমিটির নেতা কাজী মো. জালোয়া, রূপ কুমার চাকমা প্রমুখ।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘শান্তিচুক্তির শর্ত অনুযায়ী শান্তিবাহিনী আত্মসমর্পণ করলেও কিছু অস্ত্র জমা দিয়ে তাদের সশস্ত্র তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। চাঁদাবাজির টাকায় তাদের অস্ত্রের ভান্ডার দিন দিন আরো সমৃদ্ধ করছে। এই চাঁদাবাজির টাকার লোভে জনসংহতি সমিতি ভেঙে এখন চারটি আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনের জন্ম হয়ে সংঘাত তৈরি করছে। এই সংঘাতে প্রতিনিয়তই সবুজ পাহাড়ে রক্ত ঝরছে। খুনের পাশাপাশি পাহাড়ের ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন শিল্প ও কৃষি খাত স্থবির হয়ে রয়েছে চাঁদাবাজির যাতাকলে’।
বক্তারা আরো বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকেই সম্ভাবনাময় পার্বত্য চট্টগ্রামকে দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র করছে একটি চিহ্নিত স্বার্থন্বেষী মহল। তাই উপজাতীয় জনগোষ্ঠিকে ‘আদবাসী’ হিসেবে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান এবং দুষ্কৃতিকারীদের দীর্ঘদিনের স্বাধীন ‘জুম্মল্যান্ড’ তৈরির প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার প্রয়াস চালাচ্ছে। পাহাড়ে বাঙালি ও উপজাতীয়দের মধ্যে সহিংসতা ও সংঘাত তৈরি করে এবং উপজাতীয়দের বিপন্নতা প্রদর্শন করে আন্তর্জাতিক মহলের সহানুভূতি অর্জনের মাধ্যমে অশুভ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের স্পর্শকাতর জাতীয় ইস্যুতে বিদেশি শক্তিকে জড়ানো হচ্ছে’।