ন্যাপ সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ আর নেই

29

বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপের সভাপতি বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ মারা গেছেন। গুরুতর অসুস্থ অধ্যাপক মোজাফফর রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ৪৯ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের একমাত্র জীবিত সদস্য ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান সংগঠক হিসেবে একাত্তরে ন্যাপ ও কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীদের নিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে বিশেষ গেরিলা বাহিনী গড়ে তোলায় নেতৃত্ব দেন মোজাফফর আহমদ। প্রশিক্ষণ শেষে ওই বাহিনী ঢাকা, নরসিংদী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, রংপুরসহ বিভিন্ন রণাঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বজনমত গঠনেও ভূমিকা পালন করেন মোজাফফর আহমদ। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকার কাকরাইলে মোজাফফর আহমদের বাবার বাড়ি লক্ষ্য করে গোলাগুলি শুরু হলে তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে যান। এরপর সীমান্ত পেরিয়ে চলে যান ভারতের আগরতলায়। খবর বিডিনিউজের
তাজউদ্দীন আহমদকে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যের মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টামন্ডলী গঠন করা হলে তাতে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদকেও সদস্য করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মন্ত্রিত্ব নিতে অস্বীকার করা মোজাফফর আহমদ ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারও নেননি।
মোজাফফর আহমদের জন্ম ১৯২২ সালের ১৪ এপ্রিল, কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্সসহ এমএ পাস করার পর ইউনেসকো ডিপ্লোমা ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর যোগ দেন অধ্যাপনায়। চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ, ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন।
১৯৫২ সালের ২৪ অক্টোবর আমিনা আহমেদকে বিয়ে করেন। আর একমাত্র মেয়ে আইভির জন্ম হয় ১৯৫৫ সালে। ন্যাপের প্রেসিডিয়াম সদস্য স্ত্রী আমিনা আহমেদ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নবম সংসদের সংরক্ষিত আসনের সাংসদ ছিলেন।