ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে ক্ষেতে আগুন দিলেন কৃষক

281

ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে পাকা ফসলের ক্ষেতে আগুন দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পাইকড়া গ্রামের আব্দুল মালেক সিকদার নামে এক কৃষক। গতকাল রবিবার দুপুরে উপজেলার পাইকড়া ইউনিয়নের বানকিনা এলাকায় আব্দুল মালেক তার নিজের ধান ক্ষেতে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। তার অভিনব প্রতিবাদ দেখে ছুটে আসা এলাকার লোকজন বলছেন, টাঙ্গাইলে প্রতিমণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫শ’ টাকায়। আর একজন শ্রমিকের দিনমজুরি ৮৫০ টাকা। এতে প্রতিমণ ধানে কৃষককে লোকসান গুণতে হচ্ছে। তাতে আব্দুল মালেকের মতো কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
এ বিষয়ে আব্দুল মালেক বলেন, প্রতিমণ ধানের দাম থেকে প্রতি শ্রমিকের মজুরির দাম দ্বিগুণ। এবার ধান আবাদ করে আমরা মাঠেমারা পড়েছি। তাই মনের দুঃখে পাকা ধানে আগুন দিয়েছি।
এদিকে কালিহাতীর আউলটিয়া গ্রামের মিজানুর রহমান মজনু নামের আরেক কৃষক তার ক্ষেতের পাকা ধান এলাকাবাসীকে বিনা মূল্যে দিয়ে দিয়েছেন। এলাকাবাসী ধান কেটে অর্ধেক অংশ নিজে এবং বাকি অর্ধেক অংশ ক্ষেত মালিককে দিয়ে দিচ্ছেন।
জেলার মির্জাপুরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে প্রতিমণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকায়। অথচ শ্রমিকের দিনমজুরি ৯০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত গুণতে হচ্ছে।
রকিবুল ইসলাম নামের এক চাষী বলেন, বীজতলা থেকে শুরু করে প্রতি মণ ধান ঘরে তুলতে হাজার টাকার ওপরে খরচ হয়। কিন্তু ধান বিক্রি করছি তার অর্ধেক দামে। এবার আমরা পথে বসে গেছি। কৃষককে ধানের ন্যায্য দাম দিয়ে বাঁচাতে হলে সরকারের সুদৃষ্টি প্রয়োজন বলেও জানান কয়েকজন কৃষক। খবর বাংলানিউজের
কৃষি নিয়ে কাজ করা এনজিও কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, বর্তমানে কৃষকদের অবস্থায় খুবই শোচনীয়। লাভতো দূরের কথা, ধান চাষ করে কৃষকদের উল্টো আর্থিকভাবে বড় আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে। বিষয়টি সরকারের বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।
আব্দুল মালেকের ক্ষেতে আগুন দেওয়ার বিষয়ে পাইকড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন বলেন, এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা। কৃষকদের ধানের ন্যায্যমূল্য দেওয়া উচিত। কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কালিহাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএম শহীদুল ইসলাম জানান, প্রতিবিঘা জমিতে ধানের উৎপাদন খরচ ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা। আর ধানের বর্তমান বাজারমূল্যে প্রতি বিঘায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে কৃষকের। এমতাবস্থায় সরকারকে কৃষিকাজে যান্ত্রিকীকরণ ও ভর্তুকির পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন। তবেই কৃষক উপকৃত হবে।

সেই বাবাকে চাকরি
দিলো স্বপ্ন

সন্তানের ক্ষুধার যন্ত্রণা সইতে না পেরে সুপার শপ স্বপ্ন থেকে দুধ চুরি করা সেই বাবা’র আদ্যোপান্ত জেনে পুলিশের মধ্যস্থতায় তাকে ডেকে এনে চাকরি দিয়েছে স্বপ্ন কর্তৃপক্ষ। গতকাল রবিবার দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁও সহকারী পুলিশ কমিশনারের (এসি) কার্যালয়ে ওই বাবাকে ডেকে এনে তার চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
খিলগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) জাহিদুল ইসলাম বলেন, ওই ব্যক্তিকে অফিসে ডেকে আনা হয়েছে। স্বপ্ন কর্তৃপক্ষকেও ডাকা হয়েছে। বিপন্ন ওই ‘বাবা’র পাশে দাঁড়াতে রাজি হয়ে স্বপ্ন কর্তৃপক্ষ তার জন্য একটি চাকরির ব্যবস্থা করেছে। আজ (রবিবার) সে নিয়োগপত্র তার হাতে তুলে দিয়েছেন স্বপ্নের কর্মকর্তারা।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ওই ব্যক্তিকে স্বপ্ন কর্তৃপক্ষ তাদের অফিসে নিয়ে গেছেন। আজ (রবিবার) সেখানে তার একটি ইন্টারভিউ নেওয়া হবে। এরপর তার যোগ্যতা অনুযায়ী পদ ও বেতন নির্ধারণ করবে স্বপ্ন কর্তৃপক্ষ। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
প্রসঙ্গত গত শুক্রবার রাত পৌনে নয়টার দিকে সুপারশপ ‘স্বপ্ন’র খিলগাঁও শাখা থেকে দাম পরিশোধ না করে দুধের প্যাকেট নেওয়ার অভিযোগ ওঠে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এরপর তাকে পুলিশে সোপর্দ করলে পুলিশ কর্মকর্তা জানতে পারেন, পকেটে টাকা না থাকায় নিরুপায় হয়ে সন্তানের ক্ষুধা মেটাতে দুধের প্যাকেট নিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। বিষয়টি জেনে নিজেই দুধের দাম পরিশোধ করে ওই বাবাকে ছেড়ে দেন পুলিশ কর্মকর্তা। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ ঘটনার বর্ণনা করে একটি পোস্ট দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) খিলগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) জাহিদুল ইসলাম। বিষয়টি ভাইরাল হলে চেইনশপ স্বপ্নের নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসিরের নজরে আসে। তার নির্দেশে ওই বাবা ও সন্তানের দায়িত্ব নেওয়ার পদক্ষেপ নেয় স্বপ্ন কর্তৃপক্ষ।