দুর্নীতিতে ‘প্রচন্ড উন্নতি’ করেছি : সুলতানা কামাল

14

বাংলাদেশ দুর্নীতিতে ‘প্রচন্ড উন্নতি’ করেছে মন্তব্য করে টিআইবি চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেছেন, তার নমুনাও এরইমধ্যে দেখা যাচ্ছে। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার আইনের বাস্তবায়ন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, উন্নয়ন হলেও ‘মানবিকতায় এগোতে পারেনি’ বাংলাদেশ। আমরা উন্নয়নের একেবারে মহাসড়কে চলে গেছি, উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে গেছি, সবকিছুই হয়ে গেছি। কিন্তু উন্নয়নের সঙ্গে একই তালে কি আমরা মানবিকতাকে সামনে এগিয়ে যেতে পেরেছি? আমরা কি সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পেরেছি?
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘উন্নয়ন বলতে আমরা শুধু রাস্তাঘাট, বড় বড় প্রকল্প… যেটার মধ্যে আবার বালিশ কিনতে লাগে চৌদ্দ হাজার টাকা, তুলতে লাগবে আরও ৪ হাজার টাকা। আমরা উন্নতি করেছি দুর্নীতিতে, প্রচন্ড উন্নয়ন করেছি। যেটার কিছু কিছু নমুনা এখন বের হয়ে আসছে’।
সরকার সম্প্রতি ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান শুরু করলেও দুর্নীতির অন্যসব ক্ষেত্র এর বাইরে থেকে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে, ক্ষমতা দেখিয়ে মানুষের উপরে অন্যায় আচরণ করা হচ্ছে, ব্যাংক লুট করে ফেলা হচ্ছে, শেয়ার মার্কেটে কেলেঙ্কারি করা হচ্ছে… এই জায়গায় কিন্তু আমরা কিছু বলছি না’।
প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছায় প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষায় আইন করা হলেও তা বাস্তবায়নে কর্মকর্তাদের মধ্যে অনীহা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন সুলতানা কামাল। তিনি বলেন, ‘একটা ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছিল, কোটা বাতিল করে দেওয়া হলো। উনি যখন আইন করে দিলেন, সেই আইন বাস্তবায়ন করতে কারও কোনো উদ্যোগ দেখা গেল না। কিন্তু যখন কোটা বাতিলের কথা এলো, সেই কোটা বাতিলের সূত্র ধরে কিন্তু কোটাগুলো বাতিল হয়ে গেল। কোটা অনুযায়ী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা যা পেতেন সেটা দেওয়া হচ্ছে না’। খবর বিডিনিউজের
‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩: বাস্তবায়ন, বিদ্যমান পরিস্থিতি ও করনীয়’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পড়ে শোনান প্রতিবন্ধী নারীদের জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজেদা আক্তার। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ প্রণয়নের আগে প্রতিবন্ধীরা সমাজের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়েছিল। এই আইনের ফলে প্রতিবন্ধীরা তাদের অধিকার পাবে, সম্মানের সঙ্গে জীবনধারণ করতে পারবে। কিন্তু এই আইন হওয়ার পর ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির কোনো সাদৃশ্য আসেনি। প্রতিবন্ধীরা এই আইনের কোনো সুফল ভোগ করতে পারেনি’। আইন বাস্তবায়নে যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তাদের ব্যর্থতার কারণেই আইনটি এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নে ৬ দফা সুপারিশ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ব্লাস্টের গবেষণা উপদেষ্টা মো. তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক, প্রতিবন্ধী নারীদের জাতীয় পরিষদের সভাপতি নাসিমা আক্তার বক্তব্য দেন।